খাস কামরায় নয়, বিচারিক আদালতের আদেশ-রায় দিতে হবে প্রকাশ্য আদালতে
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

কৃষিজমির মাটি কাটার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি (টপসয়েল) কেটে চাষাবাদের অনুপযোগী করার ঘটনায় কারা দায়ী তা খুঁজে বের করতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। চট্টগ্রামের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে এক মাসের মধ্যে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের তলব করে ব্যাখ্যা শুনানিতে আজ মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে সাতকানিয়ার যেসব কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি (টপসয়েল) কাটা হয়েছে, তা বাইরে থেকে পলিমাটি এনে ৩০ দিনের মধ্যে ভরাট করতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রামের ডিসি-এসপিকে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

আদেশের সময় অনলাইনে আদালতে হাজির ছিলেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, সাতকানিয়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ওসি।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।

এর আগে সোমবার (২২ এপ্রিল) চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি (টপসয়েল) কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রতিপালন না হওয়ায় ব্যাখ্যা জানতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, সাতকানিয়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ওসিকে অনলাইনে তলব করেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার দুপুর ১টায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে এ বিষয়ে তাদের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।

চট্টগ্রামে সাতকানিয়ায় নির্বিচারে কাটা হচ্ছে ফসলি জমির টপসয়েল। কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না ফসলি জমির মাটিকাটা। রাতের অন্ধকারে যে যেভাবেই পারছে স্কেভেটর (মাটি খননযন্ত্র) দিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে ডাম্পারযোগে (মিনিট্রাক) ইটভাটায় সরবরাহ করা হচ্ছে। উপজেলার প্রতিটি এলাকায় সিন্ডিকেট করে মাটি কাটার মহোৎসব চলছে।

এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে আব্দুল মুনাফ নামের স্থানীয় একজন স্থানীয় বাসিন্দা হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে ১৯ মার্চ টপসয়েল কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এ আদেশের পরও টপসয়েল কাটা অব্যাহত থাকার বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়। এরপর আদালত সংশ্লিষ্টদের অনলাইনে তলব করেন।

এদিকে সাতকানিয়ায় গভীর রাতে কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি (টপসয়েল) কাটার সময় আটক দুইজনকে কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

গত ২১ এপ্রিল দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার কালিয়াইশ ইউনিয়নের পাঠানীপুল এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিল্টন বিশ্বাস।

কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নলুয়া ইউনিয়নের মৈশামুড়া মরফলা বাজার এলাকার দেওয়ানজী বাড়ির আলাউদ্দীনের পুত্র মো. আবুল কামাল (৪২) ও লোহাগাড়ার পদুয়া ইউনিয়নের পূর্ব বাগমোয়া এলাকার মৃত আব্দুল রশিদের পুত্র মো. এরশাদ হোসাইন (৩৮)।