ছাত্রদল নেতা জাকির হোসেন মিলনকে হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন এবং হত্যার অভিযোগে শাহবাগ ও রমনা থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ৬ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে।
২০১৮ সালের মার্চের ওই এ ঘটনার প্রায় সাড়ে চার বছর পর আজ বুধবার (১২ অক্টোবর) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে মিলনের চাচা বি এম অলি উল্যাহ বাদী হয়ে এ আবেদন করেন।
এদিন আদালতে মামলা গ্রহণের বিষয় আংশিক শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিচারক পরবর্তী শুনানির জন্য ১৭ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় আসামিরা হলেন- শাহবাগ থানার তৎকালীন ওসি আবুল হাসান, রমনা থানার তৎকালীন ওসি কাজী মাইনুল ইসলাম, শাহবাগ থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) সুজন কুমার রায়, সাইদুর রহমান মুন্সি, অমল কৃষ্ণ ও শাহরিয়ার রেজা। এছাড়া দুই থানার অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে।
২০১৩ সালের নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের ১৫(২) ধারায় দায়ের করা মামলার আবেদনে বলা হয়, মিলন ২০১৮ সালের ৬ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করার জন্য রওয়ানা হয়। ওইদিন সকাল ১০-১১টায় মানববন্ধন শেষ করে ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ মিছিলসহ ঢাকা মৎস্যভবনের কাছে পৌঁছালে বাদীর ভাতিজা জাকির হোসেন মিলনসহ অপর ছাত্রদল নেতা আক্তার হোসেন ফরাজীকে আটক করে পুলিশ সদস্যরা নির্মমভাবে নির্যাতন করতে করতে প্রথমে রমনা থানায় নিয়ে যায়।
রমনা মডেল থানার ঘটনাকালীন সময়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা মিলন ও তার সঙ্গে থাকা আক্তার হোসেন ফরাজীকে নির্যাতন করে। পরে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় এবং সেখানেও নির্মমভাবে বর্বরোচিত নির্যাতন করা হয় ভিকটিম জাকির হোসেন মিলন ও আক্তার হোসেন ফরাজীকে।
বাদী হন্যে হয়ে খোঁজাখুজি করে কোথাও তার সন্ধান না পেয়ে পরে জানতে পারে মার্চের ৮ তারিখ তাকে কোর্টে হাজির করা হয়েছে। তিনি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গিয়ে দেখতে পান পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় তার ভাতিজা জাকির হোসেন মিলনকে জখম নিয়ে কোর্টে ওঠানো হয়েছে। এরপর শাহবাগ থানার পুলিশ আদালতের কাছে রিমান্ডের আবেদন দিয়ে তা মঞ্জুর করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়।
একই বছরের ১১ মার্চ বাদী শুনতে পায়, ভিকটিম জাকির হোসেন মিলনকে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ আদালতে হাজির করে। সেদিন সকালে বাদী ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির হয়ে দেখতে পান দুইজন পুলিশ মিলনকে কোর্টে হাজির করেছে। নির্মম নির্যাতনের শিকার মিলনকে মৃতপ্রায় অবস্থায় আদালতে হাজির করার পর আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। কেরাণীগঞ্জ কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে কর্তৃপক্ষ তাকে ঢামেক হাসপাতালে পাঠায় এবং সেখানে তার মৃত্যু হয়।