ভূমি নিয়ে বিরোধ মীমাংসায় ভূমি জরিপ আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচারক হবেন জেলা জজরা। এ ছাড়া প্রয়োজনে সিনিয়র সহকারী জজ বা সহকারী জজদের ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালের মামলা নিষ্পত্তির জন্য বিচারক নিয়োগ দিতে পারবে সরকার।
এসব বিধান যুক্ত করে ১৯৫০ সালের স্টেট অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড টেন্যান্সি অ্যাক্ট (রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন) সম্প্রতি সংশোধন করা আইনটির গেজেট গত মঙ্গলবার (১১ জুলাই) প্রকাশিত হয়েছে। সংশোধিত আইনের নাম দেওয়া হয়েছে স্টেট অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড টেন্যান্সি অ্যাক্ট (অ্যামেনমেন্ট), ২০২৩।
আগে আইনে ছিল, ভূমি জরিপ আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচারক হবেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক অথবা সাবেক বিচারক। কিন্তু দীর্ঘদিনেও এই আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠিত না হওয়ায় ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তিতে ভুগতে হচ্ছে মানুষকে।
আর ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালের ক্ষেত্রে এতদিন আইনে বলা ছিল, সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আলোচনা করে যুগ্ম জেলা জজকে বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেবে সরকার। এখন এই বিধানের সঙ্গে নতুন উপধারা যুক্ত করা হয়েছে।
তাতে বলা হয়েছে, এভাবে বিচারক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত যুগ্ম জেলা জজদের ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজের ক্ষমতা দিতে পারবে সরকার। তার মানে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই এখন ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালে বিচারক নিয়োগ দিতে পারবে সরকার।
এ ছাড়া ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনাল থেকে স্থানান্তর করা মামলা নিষ্পত্তির জন্য এক বা একাধিক সিনিয়র সহকারী জজ বা সহকারী জজকে ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবেও সরকার নিয়োগ দিতে পারবে বলে নতুন বিধান যোগ করা হয়েছে।
সংসদে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন সংশোধন বিল পাস
এর আগে গত ৬ জুলাই রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন (সংশোধন) বিল, ২০২৩ পাসের জন্য জাতীয় সংসদে তোলেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে কণ্ঠভোটে বিলটি পাস হয়।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়, ২০০৪ সালে আইন সংশোধন করে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল ও ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিধান করা হয়।
ওই বিধানে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শে জেলার যুগ্ম জেলা জজদের মধ্য থেকে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিয়োগের বিধান করা হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে মামলার সংখ্যার তুলনায় ট্রাইব্যুনাল কম হওয়ায় মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা দেখা দেয়।
২০০৪ সালের করা বিধানে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক অথবা সাবেক বিচারকদের মধ্য থেকে ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনালে বিচারক নিয়োগের বিধান করা হয়। কিন্তু হাই কোর্ট বিভাগের বিচারক নিয়োগে সমস্যার কারণে ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠিত না হওয়ায় জনগণের বিচারপ্রাপ্তি বিঘ্নিত হয়।
মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা দূর করতে এবং যথাসময়ে জনগণের বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত নিয়ে আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।