বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা রুলের শুনানিতে হাইকোর্টের এজলাস কক্ষে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হট্টগোল হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রুলের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
শুনানির একপর্যায়ে বিএনপির ব্যারিস্টার কায়সার কামাল শুনানির সময় পিছিয়ে আগামীকাল (বুধবার) ধার্য করার কথা বলেন। এসময় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, কায়সার কামালকে উদ্দেশ করে বলেন, শুনানি কখন হবে সেটা আপনি বলার কে?
এসময় কোর্টে উপস্থিত বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা হইচই করে উঠেন। তারা কামরুল ইসলামকে উদ্দেশ করে ‘গম চোর’, ‘গম চোর’ বলে উচ্চ স্বরে হইচই করতে থাকেন। আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা কামরুল ইসলামের বক্তব্যে সমর্থন জানান। বিএনপির আইনজীবীরা বলেন, এটা বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ পাননি। এটা হাইকোর্ট।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল আদালতে বলেন, কোর্টের ভেতরে তিনি (কামরুল ইসলাম) যে ভাষায় কথা বলছেন, আমাদের তো বাইরে বের হতে ভয় হচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। পরে আদালতের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং শুনানির জন্য দুপুর ২টা সময় নির্ধারণ করেন।
গত ১৩ আগস্ট ঠিকানা সংশোধন করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞায় জারি করা রুলের নোটিশ পাঠাতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী কামরুল ইসলাম, সাঈদ আহমেদ রাজা, সানজিদা খানম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
এর আগে গত ১০ আগস্ট ঠিকানা সংশোধন করে আবেদন করতে বলেন হাইকোর্ট। পরে রিটকারী ঠিকানা সংশোধনের আবেদন করলে আদালত এ আদেশ দেন।
রুলসহ অর্ন্তবর্তীকালীন আদেশ
২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে তৎকালীন বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ অর্ন্তবর্তীকালীন আদেশ দিয়েছিলেন।
রুলে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রকাশ ও প্রচার নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চান আদালত।
একইসঙ্গে তারেক রহমানের বিদেশে অবস্থানের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানাতে পররাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তারেক রহমানের পাসপোর্টের মেয়াদ বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) একটি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন আদালত।
তারপর দীর্ঘদিন রুলের শুনানি হয়নি। সম্প্রতি সমাবেশে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার করে বিএনপি। এরপরই বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রুল শুনানির আবেদন করেন রিটকারী আইনজীবী নাসরিন সিদ্দিকা।