মারামারি মামলার আসামি শরিফার পক্ষে ১০০ টাকা ভাড়ায় হাজিরা দিতে এসে আদালতে ধরা পড়েছেন শারমিন নামে এক নারী। পরে আদালত প্রতারণার অভিযোগে শারমিন ও সেতারা নামের দুই নারীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে (মিস মামলা-২/২৪)। তাদের দুইজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হানীমুন তানজিনের আদালতে রবিবার (১৫ সেপ্টম্বর) দুপুরে মামলার হাজিরা দিতে এমন প্রতারণার আশ্রয় নেন তারা। এ ঘটনায় আদালত পাড়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বাদি পক্ষের আইনজীবী বাপ্পি শর্মা তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বাদির অভিযোগের ভিত্তিতে ভুয়া হাজিরার বিষয়টি আদালতের কাছে ধরা পড়ে। শারমিন উখিয়া হলদিয়া পালং ইউনিয়নের পাগলির বিল এলাকার বাসিন্দা আলী আহমদের স্ত্রী।
সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার পশ্চিম ভাদিতলা গ্রামের আবু বক্কর ছিদ্দিকের বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুর চালায় স্থানীয় জসিম উদ্দিন, রোকন উদ্দিন, শরিফা, সেতারা ইয়াছমিন ও আবেদাসহ অন্যরা।
তাদের হামলায় আহত হন অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ তিনজন। এ ঘটনায় জসিমকে প্রধান আসামি করে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও আমলী আদালত ঈদগাঁও একটি মামলা দায়ের করেন আবু বক্কর ছিদ্দিকর স্ত্রী কুলসুমা বাহার। যার সি,আর মামলা নং ১১০/২৪।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) মামলার ধার্য দিন ছিল। আদালত চলাকালীন সময় আসামিরা হাজিরা দিতে কাঠগড়ায় দাঁড়ান। এ সময় বাদী কুলসুমা আদালতে অভিযোগ করেন কাটগড়ায় দাঁড়ানো শরিফা নামে নারীটি প্রকৃত আসামি নন। শরিফা আদালত প্রাঙ্গণেই আসেনি। আসামি পক্ষ এ নারীকে শরিফা সাজিয়ে হাজিরা দিতে ভাড়া করেছে।
আরও পড়ুন: জাল নিয়োগপত্রে চাকুরি করা এক নারীর ৪ বছরের কারাদণ্ড
আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে আসামিদের নাম ঠিকানা যাছাই করে প্রতারণার সত্যতা পেয়ে শারমিন ও সেতারা নামে দুই জনকে আটকের নির্দেশ দেন। পরে আদালত বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও আমলী আদালত ঈদগাঁও আদালতের বেঞ্চ সহকারী মকছুদ আহমেদ জানান, এ ঘটনায় আদেশনামা মূলে কক্সবাজার সদর আদালতে মামলা করা হয়েছে।
কক্সবাজার সদর আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ শফি মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় আদালত বাদি হয়ে একটি মামলা করেন। যা মিচ মামলা নং-২/২৪। তারিখ ১৫-০৯-২০২৪। মামলায় সেতারা ও শারমিনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী বাপ্পি শর্মা জানান, আদালতে ভুয়া হাজিরা দেওয়াটা অপরাধ এবং পেশা পরিপন্থী কাজ। আসামি সেতারাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা না নিলে এসব প্রতারণা দিন দিন বেড়ে যাবে। পাশাপাশি আইনজীবীদের আরও সচেতন হওয়া জরুরি। এ ধরনের ঘটনা আইনজীবীদের সুনাম ক্ষুণ্ন করে।
আসামি পক্ষের আইনজীবী আবদুল হালিম অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, সেতারাসহ চারজন আসামির হাজিরা ও একজন মহিলা আত্মসমর্পণের কথা ছিল। আমিও সে মতে হাজিরা ও জামিন আবেদন করি। কিন্তু তারা একশত টাকায় একজন মহিলাকে ভাড়া করে শরিফা সাজিয়ে কাঠগড়ায় তুলে। সেটি আদালতের কাছে ধরা পড়ে যায়। বিষয়টি আমি জানতাম না, তারা আমাকে জানায়নি।