চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ৬ দিন আগে পদত্যাগ করেছেন মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তাসহ সব কর্মকর্তা। ফলে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না।
মূলত আইনজীবীদের দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নির্বাচনী কর্মকর্তারা।
আজ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বরাবর চিঠি দিয়ে এ তথ্য জানান নির্বাচনী কর্মকর্তারা।
চিঠিতে মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সোলায়মান, নির্বাচনী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দত্ত, তারিক আহমদ, সাম্যশ্রী বড়ুয়া এবং মো. নুরুদ্দিন আরিফ চোধুরীর স্বাক্ষর রয়েছে।
ওই পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘গত ১৪ জানুয়ারি সমিতির গঠনতন্ত্রের বিধানমতে সমিতির নির্বাচনে সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষতার সহিত দায়িত্ব পালনের জন্য আমাদের মনোনীত করা হয়। দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী কর্মকর্তারা প্রার্থী তালিকা চুড়ান্ত এবং ব্যালট পেপার ছাপানোসহ নির্বাচনের চুড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিলাম।’
আরও পড়ুন: চিন্ময় দাসের জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল
পদত্যাগপত্রে বলা হয়, আজ (মঙ্গলবার) আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগের প্রস্তাব করে একটি দরখাস্ত দেয়। অপরদিকে ঐক্য পরিষদ বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সমর্থক আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের মনোনয়ন বাতিলের জন্য আবেদন করেন। দুটি আবেদনই সমিতির গঠনতন্ত্র বর্হিভূত। তাছাড়া নির্বাচন কমিশন চায় না সমিতির কোনো সদস্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে হেনস্তার শিকার হোক।
এতে আরও বলা হয়েছে, উভয়পক্ষের পারস্পরিক অবস্থান নির্বাচনের প্রতিকূলে হওয়ায় এবং নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে বিভিন্নভাবে হেনস্তা, ভয়ভীতি ও হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। এমতাবস্থায়, আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন সুষ্ঠু পরিবেশে সম্পন্ন করার কোনো সুযোগ বা পরিবেশ না থাকায় নির্বাচন কমিশন সর্বসম্মতভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে অপরাগতা প্রকাশ করে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
পদত্যাগ করার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও মূখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সোলায়মান এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
জানতে চাইলে আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি আমাদের সমিতির নির্বাচন হচ্ছে না। এখন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ১১ ফেব্রুয়ারি সাধারণ সভা ডাকা হবে। সেখানে এডহক কমিটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এছাড়া আগামীকাল (বুধবার) আমাদের কমিটির মিটিং আছে। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’
উল্লেখ্য, নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ি আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। নির্বাচন উপলক্ষে গত ১৪ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন গঠন করে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী কমিটি।
নির্বাচনে ২১টি পদের জন্য ৪০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল। সমিতির তালিকাভুক্ত আইনজীবির সংখ্যা মোট ৫ হাজার ৪০৪ আইনজীবী।