ইনকিলাব সম্পাদকের বিরুদ্ধে নোমান গ্রুপের ২ হাজার কোটি টাকার মানহানি মামলা
মামলা (প্রতীকী ছবি)

অনলাইন জুয়া: মেহেরপুরে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে প্রথম মামলা, আসামি ১৯

সদ্য কার্যকর হওয়া ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর আওতায় দেশের প্রথম মামলা দায়ের হয়েছে মেহেরপুর জেলায়।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জেলার মুজিবনগর থানায় এ মামলাটি দায়ের করা হয়।

এতে ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে, পাশাপাশি অজ্ঞাত আরও অনেককেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

মামলাটি দায়ের করা হয়েছে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের ২০(২), ২৪(২) ও ২৭(২) ধারায়।

আসামিদের মধ্যে রয়েছেন মুজিবনগরের কোমরপুর গ্রামের মুকুল, শুভ (২২), প্রসেনজিৎ হালদার (২৫), আক্তারুজ্জামান ফিলসন, শামীম (৩০), মহাজনপুর গ্রামের মিঠু (৪০) ও সোহাগ (৩৮), গোপালপুর গ্রামের বদরুদ্দৌজা রয়েল (৩৭), রসিকপুর গ্রামের সিরাজ (৩৬), মোনাখালী গ্রামের মাহফুজুর রহমান (২১), গাংনী উপজেলার গাড়াডো গ্রামের তুলিপ হোসেন (৩০), সদর উপজেলার বামনপাড়ার রঞ্জু ও রাজু, কোর্ট পাড়ার সাজু, শেখ পাড়ার পনির (২৪) এবং স্টেডিয়াম পাড়ার বাপ্পি (৩০)।

এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা আন্তর্জাতিক অনলাইন ক্যাসিনো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে দেশ-বিদেশে টাকা পাচার করত। বিকাশ, নগদ, রকেট ও উপায় অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কোটি টাকার লেনদেন হতো। তারা ফেসবুক ও টেলিগ্রাম গ্রুপে দ্রুত আয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলত।

আরও পড়ুনবিচার বিভাগ কেবল ঐতিহ্যের স্বস্তিতে টিকে থাকতে পারে না : প্রধান বিচারপতি

মুজিবনগর থানা সূত্রে জানা যায়, গত ৩ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টায় কোমরপুর এলাকায় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ অভিযান চালিয়ে এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তাররা হলেন দেলোয়ার হোসেন দিপু (৪০), সুমন আলী (৩৮) ও সাকিবুল ইসলাম (২৩)। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি টয়োটা প্রিমিও কার, চারটি স্মার্টফোন, মোবাইল ব্যাংকিং সিম, লেনদেন সংক্রান্ত নথি ও অন্যান্য ডিজিটাল প্রমাণ।

দিপুর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে আরও উদ্ধার হয় একটি স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৩ আল্ট্রা, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের তিনটি কার্ড এবং দুটি পেনড্রাইভ। অভিযানটি পরিচালনা করেন ডিবি শাখার পরিদর্শক মুহাদ্দিদ মোর্শেদ চৌধুরী ও শিমুল কুমার দাস।

ডিবির তথ্য অনুযায়ী, এই চক্রটি মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও আশপাশের এলাকায় অনলাইন জুয়া ও অবৈধ ই-লেনদেনের নেটওয়ার্ক চালাত। গ্রেপ্তার তিনজনই মামলার তালিকাভুক্ত আসামি।

মেহেরপুরে অনলাইন জুয়ার ফাঁদে পড়ে শতাধিক যুবক নিঃস্ব হয়েছেন, আর কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে বিদেশে। বিষয়টি স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

এই অনলাইন জুয়ার সঙ্গে সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, তার স্ত্রী যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য মোনালিসা, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা, পুলিশের কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ সমাজের প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তির নাম জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।

সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, বর্তমানে বিএনপির কয়েকজন নেতার তত্ত্বাবধানে মেহেরপুরে অনলাইন জুয়ার ব্যবসা চলছে। এ প্রেক্ষিতে সরকার ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫’ কার্যকর করেছে, এবং এর আওতায় প্রথম মামলাটি দায়ের হলো মুজিবনগর থানায়।