চলতি বছর পহেলা বৈশাখের প্রতিটি অনুষ্ঠানস্থল থাকবে ধূমপানমুক্ত। অনুষ্ঠানস্থলে ধূমপান করলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বৈশাখের সব অনুষ্ঠানস্থল ধূমপানমুক্ত রাখতে নিরাপত্তা কর্মীরা কাজ করবে। এজন্য অনুষ্ঠানস্থলে ডিএমপির মোবাইল কোর্ট থাকবে। যদি কেউ অনুষ্ঠানস্থলে ধূমপান করে তবে সেখানে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সব অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে পর্যাপ্ত সংখ্যক পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, রমনা পার্ক এলাকায় কন্ট্রোলরুম থাকবে, সেখান থেকে সার্বক্ষণিক সবকিছু মনিটরিং করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে। পুরো এলাকায় ওয়াচ টাওয়ার থেকে সার্বিক পরিস্থিতির উপর নজরদারি করা হবে।
রবীন্দ্র সরোবর, রমনা পার্ক, হাতিরঝিল এলাকায় জলাশয় রয়েছে। সেসব জলাশয়ে নৌটহল এবং উদ্ধারকারী ডুবুরি দল প্রস্তুত থাকবে। অনুষ্ঠানস্থলে মেডিকেল টিম তাদের অ্যাম্বুলেন্সসহ প্রস্তুত থাকবে।
যেকোন বিপদ দেখা দিলে সে অনুযায়ী আমাদের ইভাকুয়েশন প্ল্যান রয়েছে। আশপাশের এলাকার হাসপাতালগুলোকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হবে।
ইভটিজিং প্রতিরোধে পুলিশের বিশেষ দল, টহল ডিউটি, ফুট পেট্রোলিংয়ের সমন্বয়ে সুদৃঢ় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। সব দর্শনার্থীকে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও ম্যানুয়ালি চেকিংয়ের পর অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে।
পহেলা বৈশাখের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা চারুকলা থেকে চিরাচরিত রুটেই যাবে। পুরো পথে সিসিটিভি ক্যামেরা ও পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকবে। পথিমধ্যে কেউ মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পারবে না। কারণ চতুর্দিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে মানবশিল্ড গঠন করা হবে।
যারা মাস্ক ব্যবহার করবে তারা মাস্ক মুখে না পড়ে হাতে রাখতে পারবে। যারা মঙ্গল শোভাযাত্রায় মাস্ক ও বিভিন্ন সামগ্রী বহন করবে চারুকলা থেকেই তাদের একটি তালিকা পুলিশকে দেওয়া হবে। প্রতিবারের মতো ভুভুজেলা নিষিদ্ধ থাকবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, নিরাপত্তাজনিত কোনো হুমকি নেই, নিরাপত্তার দায়িত্ব আমাদের আর আনন্দ করবে সবাই।
তিনি বলেন, আমরা মানুষকে নিরাপদে রাখতে রমনা পার্ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকায় কেন্দ্রীয় রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে থাকি। এই এলাকাগুলো নববর্ষের ‘হ্যাপি জোন’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে নগরবাসী পুলিশকে সহযোগিতা করে চেকিংয়ের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন। এজন্য তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।
আপনারা অনেকে বলেন উৎসবকে ঘিরে আমরা বিধি-নিষেধ দিয়ে থাকি। এটা রাষ্ট্রের পক্ষে কোনো বিধি-নিষেধ না। আপনাকে নিরাপত্তা দিতে আপনার মধ্যে নিরাপদবোধ তৈরি করতে আমাদের এই উদ্যোগ। আপনারা দেখেছেন বাঙালি সংস্কৃতির উপর অনেকবার আঘাত হেনেছে কিছু দুষ্কৃতিকারী। তারা বাঙালি সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। অনুষ্ঠানের আয়োজক সংস্থা ও সবার সহযোগিতায় পুলিশ সব অনুষ্ঠানের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেবে।