ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট

ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির কাজের পরিধি নিয়ে মামলা খারিজ

প্রধান বিচারপতিকে অবিশ্বাস করা যায় না জানিয়ে তাঁর কাজের পরিধি নিয়ে দায়ের করা মামলাটি খারিজ করে দিল ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট।

আইনজীবী অশোক পান্ডার দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে বুধবার (১১ এপ্রিল) এমনটাই জানাল ভারতের শীর্ষ আদালত।

কিন্তু এর পরেও কি বিতর্কের যবনিকা পতন হল? মাস্টার অব রোস্টার বলে পরিচিত সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ক্ষমতায় একটা নিয়ন্ত্রণ রেখা থাকা উচিত দাবি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন অশোক পান্ডে নামে লখনউয়ের এক আইনজীবী। কাকতালীয় ভাবে হলেও সেই মামলার রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের এমন এক বেঞ্চ, যার মধ্যে ছিলেন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র স্বয়ং।

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ‘শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি নিজেই এক প্রতিষ্ঠান। মামলা বণ্টনের বিষয়টি তাঁর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।’ বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছিল গত জানুয়ারি মাসে। সাংবাদিক সম্মেলন করে বিচারপতি জে চেলামেশ্বর, বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি বি লেকুর ও বিচারপতি কুরিয়েন যোসেফের মতো সুপ্রিম কোর্টের চার প্রবীণ বিচারপতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন।

তাঁদের অভিযোগ ছিল, মামলা বণ্টনের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব চলছে। বেছে বেছে গুটিকয়েক বিচারপতিকেই সাংবিধানিক মামলার ভার দেওয়া হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের মধ্যে ‘সিনিয়রিটি’র নিরিখে দশম স্থানে রয়েছেন বিচারপতি অরুণ মিশ্র। কিন্তু প্রবীণ বিচারপতিদের এড়িয়ে ‘সংবেদনশীল’ বিচারপতি লোয়া মৃত্যু মামলাটি বিচারপতি মিশ্রের বেঞ্চে পাঠিয়ে প্রবল বিতর্কের মুখে পড়েন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র। বিচারপতি চেলামেশ্বর ও অন্য তিন বিচারপতির অভিযোগ ছিল, মাস্টার অব রোস্টারের পদকে তিনি অন্যায় ভাবে ব্যবহার করছেন।

প্রধান বিচারপতি ক্ষমতায় লাগাম টানার দাবি জানিয়ে যে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল, তাতেও যেন সেই এক সুর। মামলাটি উঠেছিল প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি খানউইলকর এবং বিচারপতি চন্দ্রচূ়ড়ের বেঞ্চে। তাতে বলা হয়, মাস্টার অব রোস্টার হিসেবে অবাধ ক্ষমতা ভোগ করছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। বিষয়টি নিয়ে সুস্পষ্ট নিয়ম থাকা উচিতকিন্তু এই যুক্তি মানতে চায়নি সুপ্রিম কোর্ট। এই দিনের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, প্রধান বিচারপতি হলেন ‘ফার্স্ট অ্যামং ইকুয়্যালস’। অর্থাত্ যোগ্যতার বিচারে অন্য বিচারপতিদের সমতুল্য হলেও কর্তব্যের বিচারে তিনিই প্রথম। আদালত সুষ্ঠু ভাবে চালানোর স্বার্থেই তিনি মামলা বণ্টন করেন বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা