ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট

মৃত্যুদণ্ড ঠান্ডা মাথায় খুন, সুপ্রিম কোর্টে বলল নির্ভয়ার ধর্ষকরা

 

মৃত্যুদণ্ডকে বিচারের নামে ঠান্ডা মাথায় খুন করার সমান বলে দাবি করেছে ভারতে চলন্ত বাসে মেডিকেল ছাত্রী নির্ভয়াকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা। আদালতকে তারা বলেছে, ‘বিচারের নামে তাদের ঠান্ডা মাথায় খুন করা হচ্ছে।’

শুক্রবার মৃত্যদণ্ডকে চ্যালেঞ্জ করে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করার সময় এমনটাই বলে ধর্ষকরা। এদিন সাজাপ্রাপ্ত ওই চার ধর্ষক দেশটির শীর্ষ আদালতে তাদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা মাফ করে দেয়ার জন্য আবেদন করে। তবে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।

সাজাপ্রাপ্তরা সুপ্রিম কোর্টকে জানায়, মৃত্যুর সময় নির্ভয়া যে বিবৃতি দিয়েছিল তা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। তিনি কখনোই অভিযুক্তদের নাম বলেননি।

তবে বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি সিদ্ধার্থ লুথরা জানান, ২০১৭ সালের মে মাসেই সুপ্রিম কোর্ট দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল রেখেছে। যে ধরনের অপরাধ তারা করেছে তার জন্য মৃত্যুদণ্ডই সঠিক।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে চলন্ত বাসে নির্ভয়াকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ওইদিন রাতে এক বন্ধুর সঙ্গে সিনেমা দেখে বাড়ি ফিরছিলেন ২৩ বছর বয়সী মেডিকেল শিক্ষার্থী নির্ভয়া। পথে একটি বাসে উঠেছিলেন তারা। বাসে ধর্ষকেরা যাত্রী সেজে বসেছিল। কিছুটা ফাঁকা জায়গায় বাসটি পৌঁছতেই ওই তরুণী ও তার বন্ধুকে প্রচণ্ড মারধর করে ও তারপরে ছয়জনে মিলে গণধর্ষণ করে নির্ভয়াকে। লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ও শরীরের নানান অংশে তাকে জখমও করা হয়। পরে নগ্ন অবস্থায় তাদের দুজনকে বাস থেকে ফেলে দেয়া হয় ও বাসচাপা দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়।

১৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মৃত্যুর কাছে হার মানেন নির্ভয়া। ধর্ষণের এই ঘটনায় সারা দেশ উত্তাল হয়ে ওঠে।

ওই ঘটনায় ছয়জন দোষীর মধ্যে বাসচালক রাম সিং জেলেই আত্মহত্যা করে। আর এক আসামি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাকে কিশোর হোমে রাখা হয়েছিল। পরে ১৮ বছর হওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। অন্য চারজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয় দেশটির আদালত।