গাসিক নির্বাচন স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি বুধবার

 

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (গাসিক) নির্বাচনের ওপর হাইকোর্টের দেওয়া তিন মাসের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের আপিল পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য বুধবার (৯ মে) দিন নির্ধারণ করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে (৮ মে) উভয়পক্ষের শুনানি শেষে চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ আদেশ দেন।

আদালতে আপিলের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ। এছাড়া, এ মামলার রিট আবেদনকারী আজহারুল ইসলাম সুরুজের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ।

এর আগে গত ৭ মে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিলের সিদ্ধান্ত নেন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। পরে এ বিষয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর খাস কামরায় দেখা করেন বিএনপির মেয়র প্রার্থীর আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান ও অ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিয়ন। এরপর তাকে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। একইসঙ্গে আপিল আবেদনের শুনানির জন্য মঙ্গলবার (৮ মে) দিন ধার্য করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ৬ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ছয়টি মৌজাকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত করা গেজেট এবং গাজীপুর সিটি নির্বাচন সংক্রান্ত তফসিল কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিব, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (সিটি করপোরেশন-২), ঢাকার জেলা প্রশাসক, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ৯ জনকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচার জাফর আহমদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

রিটকারী আইনজীবী বিএম ইলিয়াস জানান, ২০১৩ সালে সাভারের ছয়টি মৌজাকে (শিমুলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়বাড়ী, ডোমনা, শিবরামপুর, পশ্চিম পানিশাইল, পানিশাইল ও ডোমনাগ) গাজীপুর সিটি করপোরেশনের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তখন বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে এবিএম আজহারুল ইসলাম সুরুজ আপত্তি তোলেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সে আপত্তি নিষ্পত্তি না করায় তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। সেই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সুরুজের আবেদনটি নিষ্পত্তি করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু বিষয়টি নিষ্পত্তি না করেই ২০১৬ সালে শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে এই ছয়টি মৌজা শিমুলিয়ার মধ্যেই ছিল। পরে ওই নির্বাচনে আজহারুল ইসলাম সুরুজ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। কিন্তু পরবর্তীতে এ বছরের ৪ মার্চ ওইসব মৌজাকে সিটি করপোরেশনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে ফের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ফলে প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী গত ৩ এপ্রিল গাজীপুর সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এরপরে ওইসব মৌজা গাজীপুর সিটির অন্তর্ভুক্ত হলেও স্থানীয়দের ভোটাধিকার নির্ধারণ না করা, ২০১৩ সালের ছয়টি মৌজা অন্তর্ভুক্তির গেজেট এবং এ বছরের ৪ মার্চের গাজীপুর সিটি নির্বাচনের গেজেট ও তফসিলের চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হয়।

প্রসঙ্গত, তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৫ মে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেছিল নির্বাচন কমিশন। এ নির্বাচনকে ঘিরে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন প্রার্থীরা।