বিবি রহিমা (বামে উপরে ইনসেটে)

আইনজীবীর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার রহস্য উদঘাটিত হয়নি আড়াই মাসেও

চট্টগ্রামে আইনজীবীর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো খুনের কারণ ও জড়িতদের শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া গণমাধ্যমকে বলেন, “হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটনে আমরা পারিবারিক বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করছি। বাইরের বিভিন্ন দিকও আমরা খতিয়ে দেখেছি। তবে এখনও পর্যন্ত বাইরের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তবে বাইরের বিষয়টি আমরা তদন্ত থেকে ছেড়ে দেইনি।”

হত্যাকাণ্ডের সময় নিহতের আড়াই বছর বয়েসী সন্তানের অবস্থান নিশ্চিত করতে পারলেই ঘটনার অনেক বিষয় পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা।

গত ১ অগাস্ট নগরীর চান্দগাঁও থানার ফরিদার পাড়া এলাকায় নিজ বাসা থেকে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক এহতেশামুল পারভেজ সিদ্দিকী জুয়েলের তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিবি রহিমার (২৭) হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

পরদিন নিহতের মা বেদোরা বেগম চান্দগাঁও থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন বলে নগর পুলিশের পাঁচলাইশ জোনের সহকারী কমিশনার দেবদূত মজুমদার জানান।

মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ।

হত্যাকাণ্ডের পর এহতেশামুল পারভেজ সিদ্দিকী জুয়েল সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সকালে তিনি আদালতে চলে যান। বিকালে বাসায় ফিরে ঘর তছনছ ও মেঝেতে হাত-পা বাঁধা স্ত্রীর লাশ দেখতে পান।

পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আগের স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর রহিমাকে বিয়ে করেছিলেন জুয়েল।

লাশ উদ্ধারের সময় পুলিশের তৈরি সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, আঘাত ও শ্বাসরোধে বিবি রহিমাকে খুন করা হয়। তার গলা বাম দিকে বাঁকানো ছিল। যে ওড়নায় গলা পেঁচানো হয় সেটি দিয়েই পা বাঁধা হয়েছিল। আর লাল রঙের একটি গামছা দিয়ে পায়ের গোড়ালি বাঁধা ছিল।

তদন্ত কর্মকর্তা রাজেশ বলেন, “হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই আমরা নিশ্চিত ছিলাম, বিবি রহিমাকে হত্যার পর হাত-পা বাঁধা হয়েছিল।”

তিনি আরও বলেন, আইনজীবী জুয়েল জানিয়েছিলেন তিনি বাসায় এসে তার দুই বছর নয় মাস বয়সী সন্তানকে খাটের ওপর বসা দেখতে পেয়েছিলেন।

“ঘরটিতে বিছানাপত্র ও অন্যান্য মালামাল যেভাবে এলোমেলো ছিল সে অবস্থায় একটি শিশুর পক্ষে সেখানে স্বাভাবিকভাবে বসে থাকা সম্ভব নয়।”

গোয়েন্দা কর্মকর্তা রাজেশ বলেন, “আমাদের ধারণা সকাল থেকে বিকালের মধ্যে কোনো এক সময়ে রহিমা খুন হন। তবে ওই সময় তার শিশু সন্তানটি কোথায় ছিল সেটা আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি।”

শিশুটির অবস্থান নির্ধারণ করতে পারলেই খুনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে শনাক্ত করাও সম্ভব হবে বলে মনে করেন তদন্ত কর্মকর্তা।