সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক

অগ্নিদুর্ঘটনা এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর ১৫ নির্দেশনা

গত ২৮ মার্চ বনানীতে এফ আর টাওয়ারে মর্মান্তিক ও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২৬ জন নিহত ও ১৩০ জন আহত হওয়ার ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছে মন্ত্রিপরিষদ। এ সময় ঢাকায় বিভিন্ন ভবনে অগ্নি দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপটে অগ্নি নিরাপত্তায় সংশ্লিষ্টদের একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ সোমবার (১ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। অগ্নিদুর্ঘটনা এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া অনুশাসনগুলো হলো-

  • ফায়ার সার্ভিসের ক্লিয়ারেন্স নিয়ে হাইরাইজ বিল্ডিং নির্মাণ করতে হবে এবং অগ্নিদুর্ঘটনা এড়ানোর পরামর্শগুলো মানা হচ্ছে কিনা সেগুলোর নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে।
  • ভবনগুলোর অগ্নিনিরোধক সিস্টেম বা ক্লিয়ারেন্স প্রতি বছর নবায়ন করতে হবে। আবাসিক ও বাণিজ্যিক সব ভবনের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
  • বিল্ডিং কোড অনুসরণ করে ভবন নির্মাণ করতে হবে এবং এর কোনও ব্যত্যয় সহ্য করা হবে না।
  • বিভিন্ন ভবন বা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ফায়ার ড্রিল করতে হবে এবং এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
  • অগ্নিকাণ্ডের সময় ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণের কোনও উপায় আছে কিনা তা খুঁজে বের করতে হবে। কারণ আগুনে পোড়ার চেয়ে ধোঁয়ার কারণেই বেশি নিহতের ঘটনা ঘটে।
  • রাজধানীতে প্রায়ই পানির অভাবে আগুন ঠিকমতো নেভানো যায় না। এজন্যই আগুনের কথা মাথায় রেখে রাজধানীতে পর্যাপ্ত জলাশয় ও জলাধার তৈরি করতে হবে।
  • রাজধানীর আশপাশের লেকগুলো সংরক্ষণ করতে হবে।
  • অগ্নিকাণ্ড বা অন্যান্য দুর্ঘটনায় ২৩ তলা পর্যন্ত পৌঁছানোর উপযোগী লেডার/লম্বা সিঁড়ি তিনটি আছে ফায়ার সার্ভিসের। এর সংখ্যা বাড়াতে হবে
  • বাসাবাড়ি, অফিস বা বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করতে হবে চারপাশে দরজা-জানালাসহ এবং শত ভাগ ফায়ার এক্সিট নিশ্চিত করতে হবে
  • বৈদ্যুতিক দরজা পরিত্যাগ করে অন্য দরজা লাগাতে হবে যাতে বিদ্যুৎ না থাকলে বা দুর্ঘটনার সময় তা খোলা যায়।
  • ভবনের চারপাশে জাল লাগানো সিস্টেম থাকতে হবে। কেউ যাতে ওপর থেকে পড়ে মারা না যায় সেজন্য এই ব্যবস্থা রাখতে হবে।
  • হাসপাতাল ও স্কুলে অবশ্যই বারান্দা রাখতে হবে যেন কোনও দুর্ঘটনার সময় মানুষ আশ্রয় নিতে পারে।
  • ইন্টেরিয়র ডিজাইনাররা জায়গা বাঁচাতে ভবনের ভেতর সব জায়গা বন্ধ করে ডিজাইন করে। এরকম কোনও ডিজাইন করা যাবে না। মানুষ যেন অবাধে যাতায়াত করতে পারে সেই ব্যবস্থা রাখতে হবে।
  • দুর্ঘটনার সময় মানুষ যাতে লিফট ব্যবহার না করে সেজন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে।
  • যে কোনও ভবনে আশা-যাওয়ার জন্য একাধিক দরজা রাখতে হবে। ভবনে প্রবেশের একটা দরজার সিস্টেম পরিহার করতে হবে।

এছাড়াও বৈঠকে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ. ম. রেজাউল করিম পুরো ঢাকা শহরের জন্য ২৪টি টিম গঠন করা হয়েছে বলে অবহিত করেছেন। টিমগুলো পুরো ঢাকা শহরে যত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও হাইরাইজ বিল্ডিং আছে পরিদর্শন করে যেটা কম্প্যায়েন্সের আওতায় আসবে তা ফিট বলে ঘোষণা দেয়া হবে। যেটা আনফিট সেটা বন্ধ করে দেয়া হবে। কঠোর ভাবে এটা এনফোর্স করা হবে।