ছগির আহমেদ

টর্ট আইন সম্পর্কিত কিছু কথা

রোমান আইনকে পৃথিবীর সকল আইনের “Mother Law” বলা হয়। টর্ট আইন উৎপত্তি লাভ করেছে রোমান আইন থেকে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বৃটেনে এই আইনের প্রসার লাভ করেছে। বর্তমানে টর্ট আইনটি রোমান মতবাদ “Alterium Non Leadere” এর ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন ছগির আহমেদ।

Alterium Non Leadere -এর অর্থ : কথা, কাজ বা আচরন দ্বারা কারো ক্ষতি না করা। টর্ট এর ব্যাপক প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায় ইংল্যান্ডে। বিশেষ করে নরম্যান বিজয়ের পর থেকে টর্ট ব্রিটিশ আইন ব্যাবস্থায় প্রবেশ করে। যেকোন মানুষ কোন না কোন রাষ্ট্রের নাগরিক। একজন নাগরিক হিসেবে তার কিছু আইনানুগ অধিকার রয়েছে যা সে ভোগ করার অধিকারী। যখনই কোন ব্যক্তি অন্যায় কিংবা অবৈধভাবে বা বেআইনীভাবে কারো সেই অধিকার হস্তক্ষেপ করবে তখনই তাকে টর্ট বলা যাবে। এর জন্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি অবশ্যই টর্ট আইনুযায়ী প্রতিকার পাবেন।

টর্ট এর সংজ্ঞা:
ল্যাটিন “Tortum” শব্দ থেকে Tort শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে।আভিধানিক অর্থে “Tort “বলতে অপরের কোন ক্ষতিসাধন করাকে বুঝায়। আরো সহজভাবে বলা যায় “Tort” শব্দের অর্থ হলো বাকা।

রোমান ভাষায় “Tort” কে Deliet বলা হয়। ইংরেজী ভাষায় “Tort “কে wrong বলা হয়। বাংলা ভাষায় Tort এর সঠিক এবং গ্রহণযোগ্য কোনো শব্দ না থাকায় একে টর্ট বলে অভিহিত করা হয়। তবে কেউ কেউ আবার একে Quasicontract (নিমচুক্তি) ও Civil wrong (দেওয়ানী চুক্তি) বলে আখ্যায়িত করে থাকে।

যখন কোন ব্যক্তি তার দায়িত্ব কর্তব্য থেকে সরে গিয়ে কিংবা বিচ্যুতি হয়ে অন্য কারো ক্ষতি সাধন করে তখন তাকে Tort বলা হয়।

প্রফেসর Salmond এর মতে-Tort হচ্ছে চুক্তি ও বিশ্বাসভঙ্গ ব্যতীত এমন এক ধরনের দেওয়ানী অপরাধ যার প্রতিকার হচ্ছে অনির্ধারিত আর্থিক ক্ষতিপূরণ।

Sir Frederric Pollock এর মতে-এমন কোন কাজ করা বা করা হতে বিরত থাকা যা আইন সমর্থনযোগ্য নয় এবং চুক্তির সাথে সম্পর্কহীন তাকেই Tort বলা হয়।

সবকিছু পর্যালোচনা করে পরিশেষে বলা যায়,যখনই কোন ব্যক্তি তার কর্তব্য পালনে অবহেলা করবে বা অন্যের অধিকারে অবৈধ হস্তক্ষেপ করবে আইনুযায়ী সে দায়ী হবে এবং এটাকে বলা হয় Tort।

তবে এই ধরনের অধিকার ভঙ্গ বা অপরাধ কোন প্রকার চুক্তি বা বিশ্বাস ভঙ্গ হতে সৃষ্টি হয় না।তবে যে ব্যক্তি Tort এর অপরাধে দায়ী হবে তাকে আর্থিক ক্ষতিপূরণে প্রদান করতে হবে। এটি Tort এর অন্যতম প্রতিকার। তাছারাও ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষের আবেদন অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা ও অপসারনের মাধ্যমেও Tort এর প্রতিকার প্রদান করা হয় এবং সাধারন আইনে এসকল প্রতিকার প্রদান করা হয়ে থাকে।

টর্ট আইনের উদ্দেশ্য:
টর্ট আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে আর্থিক ক্ষতিপূরন প্রদান করা। তবে এই আর্থিক ক্ষতিপূরণের নির্দিষ্ট কোনো সীমা নেই। ক্ষতির প্রকৃতির উপর নির্ভর করে আদালত ক্ষতিপূরণের নির্দেশ প্রদান করে বিবাদী পক্ষকে (ক্ষতিকারক)।

ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার পৃথিবীর সকল সমাজে স্বীকৃত। কিন্তু এই ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার ভোগ করতে গিয়ে অন্য ব্যক্তির অধিকারের প্রতিও সজাগ থাকতে হবে।

ক) প্রত্যেকের গান-বাজনা করার অধিকার আছে। পাশাপাশি তার প্রতিবেশীরও অধিকার আছে ব্যক্তিগত স্বাচ্ছন্দ বজায় রাখার। তাই প্রতিবেশীকে ক্ষতি করে গান-বাজনা করা যাবে না। আর কোন প্রতিবেশীর অধিকারকে ক্ষুন্ন করে কেউ গান-বাজনা করলে উক্ত প্রতিবেশী টর্ট আইনের আওতায় দেওয়ানী আদালতে মামলা দায়ের করতে পারবে।

খ) কোন ব্যক্তির যেমন নির্বিঘ্নে পথ চলার অধিকার আছে, তেমনি অপর ব্যক্তির সে পথে গাড়ি চালানোর অধিকার আছে। পথ চলতে কেউ তার ক্ষতি করতে পারে না এই বিশ্বাসে কেউ যদি কাপড়ে চোখ বেধে মাঝপথে চলতে থাকে তবে তার ক্ষতির জন্য কাউকে দায়ী করতে পারে না। আবার চোখ বাধা অবস্থায় কোনো পথচারীকে চলতে দেখে যদি কোন গাড়ি চালক ইচ্ছাকৃতভাবে ও বেপরোয়াভাবে তাকে আঘাত করে তবে সেক্ষেত্রে সে দায়িত্ব হতে রেহাই পাবে না।

গ) বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা কাম্য কিন্তু অবৈধ প্রতিযোগিতার কারণে কোনো ব্যবসায়ীর ক্ষতি সমর্থনীয় নয়।

এক ব্যক্তির কথা,কাজ বা আচরন দ্বারা যদি অন্য কোনো ব্যক্তির ক্ষতি সাধিত হয় তবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে প্রতিকার প্রদান করা টর্ট আইনের মূল উদ্দেশ্য। সর্বোপরি টর্ট আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে ক্ষতিপূরণ বা অন্যান্য যেসকল প্রতিকার রয়েছে যেমনঃ নিষেধাজ্ঞা, অপসারন ইত্যাদি প্রদান করা।

অপরাধীকে অপরাধে নিরুৎসাহিত করা এবং ব্যক্তিগত ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরন আদায় করা হল টর্ট আইনের উদ্দেশ্য। এই প্রতিকার কেবল কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, পৌরসভা বা আইনগতভাবে গঠিত যেকোন সংস্থার বিরুদ্ধেও প্রযোজ্য।

টর্ট জাতীয় অপরাধের প্রকৃতি:
নিন্মে টর্ট জাতীয় অপরাধসমূহের প্রকৃতি বা ধরন কতগুলো উদাহরণের মাধ্যমে তুলে ধরা হলো যা আগ্রহী ব্যাক্তিবর্গকে বিষয়টি বুঝতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

  • আইনসঙ্গত কাজ হিসেবে শহরের আবর্জনা ও বর্জ্য অপসারনে ঢাকা মিউনিসিপাল করপোরেশনের অবহেলা টর্ট জাতীয় অন্যায়।
  • কোনো চিকিৎসক রোগীর চিকিৎসায় অবহেলা করলে এবং সেজন্য রোগীর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলে এটাও টর্ট জাতীয় অন্যায়।
  • কোনো উকিলের অবহেলার দরুন মক্কেলের সম্পত্তির ক্ষতি হলে এটাও টর্ট বলে গণ্য হবে।
  • ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে উৎসাহ যুগিয়ে তার মাধ্যমে অন্যের ক্ষতিসাধন করাও টর্ট হিসেবে গণ্য হবে।
  • নিজের জমির ফলের গাছের ডাল অন্যের এলাকায় ঝুলে থাকলে সেটাও টর্ট হিসেবে গণ্য হবে।
  • একজনের জমির পানি অন্যের জমিতে গিয়ে পড়লে ও সেটা টর্ট হিসেবে গণ্য হবে।
  • মালিকের ইচ্ছার বিরুদ্ধে মেয়াদশেষে ভাড়াটিয়া বাড়িতে থাকলে তা টর্ট হিসেবে গণ্য হবে।

আইনগত ক্ষতি (Legal Damage)
আমরা জানি টর্ট হল একটি দেওয়ানী প্রকৃতির অন্যায় কাজ। তাই টর্টের প্রতিকার পাওয়া যায় দেওয়ানী আদালতে মামলা দায়ের করার মাধ্যমে। টর্ট সংঘটনের মামলা দেওয়ানী মামলা হিসেবে পরিচিত। কারো আইনগত অধিকার হস্তক্ষেপ করা হলেই কেবল এই ধরনের মামলা করা যায়। তাই টর্ট সংঘটনের আবশ্যকীয় উপাদান হল আইনগত ক্ষতি।বাদীর আইনগত অধিকারে হস্তক্ষেপ করলে আইনগত ক্ষতি সাধিত হয়। একটা কথা বলে রাখা প্রয়োজন, যেক্ষেত্রে প্রকৃত ক্ষতি হয়নি কেবল আইনগত ক্ষতি হয়েছে সেক্ষেত্রে টর্ট সংঘটিত হয়েছে। তার মানে বাদীকে প্রমাণ করতে হবে তার আইনগত ক্ষতি হয়েছে। এক্ষেত্রে দুটি বিখ্যাত ম্যাক্সিম রয়েছে।

(১) ড্যামনাম সাইন ইনজুরিয়া (Damnum Sine Injuria):

মূলনীতিঃ বিবাদী যদি বাদীর আইনগত ক্ষতি না করে প্রকৃত ক্ষতি করে, তাহলে বিবাদী এক্ষেত্রে দায়ী হবে না। তার মানে বাদী এক্ষেত্রে দেওয়ানী আদালতে মামলা দায়ের করে বিবাদীর বিরুদ্ধে কোন প্রতিকার পাবে না।

বিখ্যাত মামলাঃ ১৪১০ সালে Gloucester Grammar School Case এর মাধ্যমে এই নীতিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই মামলার ঘটনাটি ছিল, একজন স্কুল শিক্ষক প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রামার স্কুলের সামনে আরেকটি স্কুল স্হাপন করে।স্কুল স্হাপন করে কম বেতনে ছাত্র ভর্তি করান। যার কারণে বাদীর স্কুল হতে ছাত্ররা বিবাদীর স্কুলে চলে যেতে থাকে। তাতে করে বাদীর স্কুলে ছাত্র সংখ্যা কমে যায় এবং বাদীর যথেষ্ট আর্থিক ক্ষতি হয়। কিন্তু বিবাদীর আইনসম্মতভাবে একটি প্রতিষ্ঠান চালানোর বৈধ অধিকার আছে। তাই এক্ষেত্রে বাদী মামলা দায়ের করে কোন প্রতিকার পায়নি। কারণ এখানে বাদীর প্রকৃত ক্ষতি হয়েছে কিন্তু কোন আইনগত ক্ষতি সাধিত হয়নি।

(২) ইনজুরিয়া সাইন ড্যামনো (Injuria Sine Damno):

মূলনীতিঃ বিবাদী যদি বাদীর প্রকৃত ক্ষতি না করে আইনগত ক্ষতি করে, তাহলে বিবাদী দায়ী হবে। তার মানে বাদী বিবাদীর বিরুদ্ধে দেওয়ানী আদালতে মামলা দায়ের করে প্রতিকার পাবে।

বিখ্যাত মামলাঃ ১৭০৩ সালের Ashby v. White মামলায় এই নীতিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই মামলায় বিবাদী ছিলেন একজন রিটার্নিং অফিসার। বাদী ভোট দিতে গেলে রিটার্নিং অফিসার তাতে বাধা দেন। বাদী যার পক্ষে ভোট দিতে গিয়েছিলেন তিনি বাদীর ভোট ছাড়াই জয়লাভ করেছিলেন। তাই বাদীর ভোট দিতে না পারার কারণে প্রকৃত কোন ক্ষতি সাধিত হয়নি। তবে তাতে বাদীর আইনগত ক্ষতি হয়েছে। তাই আদালতের রায় বাদীর অনুকূলে যায়।

সাধারন ব্যতিক্রম (General Defences):
আইন সবক্ষেত্রে একইভাবে প্রয়োগ করা যায় না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়,কোন ব্যক্তিকে অন্যায় কাজ করেও দায়ী হতে হয় না। নিম্নে কোন কোন পরিস্থিতিতে অন্যায় কাজ করেও দায়ী হতে হয় না সেগুলো আলোচনা করা হলোঃ

(১) সম্মতি (consent):
কারো সম্মতি নিয়ে কোন কাজ করা হলে এবং এর ফলে কোন ক্ষতি হলে সম্মতিদানকারী ব্যক্তি উক্ত কাজের জন্য আদালতে কোন অভিযোগ দায়ের করতে পারে না। এই নীতিকে “Volenti non fit injuria” নীতি বলা হয়। বাদী স্বেচ্ছায় সম্মতির মাধ্যমে যে অধিকার পরিত্যাগ করেছে, সে অধিকার বাদী আর দাবী করতে পারবে না। এক্ষেত্রে কবিগুরু রবী ঠাকুরের কথা মনে পরে যায়। তিনি বলেছিলেন, “যাহা দিলাম উজার করিয়া দিলাম, পিছনে ফিরিয়া তাকাইতে গেলে শুধু কষ্টই পাইতে হবে।”

মুষ্টিযুদ্ধে আহত হলে কাউকে দায়ী করা যায় না।কারণ এই খেলায় উভয়পক্ষের সম্মতি ছিল। আবার ডাক্তার অনুমতি নিয়ে কোন রোগীর অপারেশন করা অবস্হায় রোগী মারা গেলে, ডাক্তারকে দায়ী করা যায় না। কারণে এখানে অপারেশনের ঝুকি সম্পর্কে রোগী এবং তার নিকট আত্নীয়-স্বজনের জানা ছিল এবং তাদের সম্মতি ছিল।

(২) অনিবার্য দুর্ঘটনা (Inevitable Accident):
সকাল প্রকারের সাবধানতা অবলম্বন করে যে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব নয়, তাকে অনিবার্য দুর্ঘটনা বলে। চলন্ত গাড়ির সামনে হঠাৎ কেউ এসে পড়ে গেলে গাড়ি ব্রেক করেও তাকে রক্ষা করা সম্ভব না। এটাকে অনিবার্য দুর্ঘটনা বলে। অনিবার্য দুর্ঘটনার কারণে বিবাদীকে দায়ী করা যায় না। কারণ এক্ষেত্রে বিবাদীর কোন অবহেলা ছিল না।

৩) দৈব ঘটনা (Act of God):
দৈব ঘটনা হচ্ছে প্রাকৃতিক কোন ঘটনা যা পূর্ব হতে অনুমান করা যায় না। প্রাকৃতিক ঘটনার জন্য সাবধানতা অবলম্বন করা যায় না। এক্ষেত্রে বিবাদীকে দায়ী করা যায় না। এখানে বিবাদীর কোন অবহেলা থাকে না। যেমন-বজ্রপাত হয়ে ঘরে আগুন লাগলে তা একটি দৈব ঘটনা। কিন্তু বৈদ্যুতিক তারে সর্ট সার্কিট হয়ে আগুন লাগলে তা কোনক্রমেই দৈব ঘটনা নয়। এটা মানুষের কাজ। এটা প্রাকৃতিক কোন ঘটনা নয়।

(৪) বিচার সংক্রান্ত কার্যাবলি (Judicial Acts):
বিচারকাজে নিয়োজিত জজ, ম্যাজিস্ট্রেট তাদের দায়িত্ব পালনকালে কারো কোন অপকার সাধিত হলে উক্ত বিচারক ও ম্যাজিস্ট্রেটকে টর্টের জন্য দায়ী করা যাবে না। বিচারকরা দায়িত্ব পালনকালে সকল প্রকার জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে থাকেন। আইনের এই বিধান শুধুমাত্র বিচারকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য নয়, এখানে জনগনের স্বার্থও নিহিত রয়েছে। কাজের পরিণতি সম্পর্কে বিচারকদেরকে যদি সর্বদা সজাগ ও সন্ত্রস্ত থাকতে হয়, তাহলে তাদের পক্ষে নির্ভয়ে ও নিরপেক্ষভাবে বিচার করা সম্ভব না। তাই অযথা মামলা করে কোন বিচারককে হয়রানি না করার জন্য এই বিধান করা হয়েছে।

(৫) বিধিবদ্ধ সংস্হা (Statutory Authority) :
বিধিবদ্ধ সংস্হার কাজ টর্ট হিসেবে গণ্য হবে না। আমরা জানি পৌরসভা একটি বিধিবদ্ধ সংস্হা। সাধারণ লোক কোথাও ময়লা-আবর্জনা ফেললে তার বিরুদ্ধে উৎপাতের মামলা করা যায়। কিন্তু পৌরসভা কোথাও ময়লা-আবর্জনা ফেললে, এর জন্য পৌরসভাকে দায়ী করা যায় না। যেমন-বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জেনারেটর স্হাপন করলে প্রতিবেশীরা উৎপাতের মামলা করতে পারে না। কারণ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড একটি বিধিবদ্ধ সংস্হা।

(৬) পিতৃত্বের অধিকার (Parental Authority) :
পিতামাতা তার ছেলেমেয়েদের-কে নিয়ন্ত্রনের শাসন করে থাকে। প্রয়োজনে সন্তানদেরকে শারীরিক শাস্তি দিয়ে থাকে। সাধারণ লোকের প্রতি এরূপ আচরণ অন্যায় কিন্তু সন্তানদের প্রতি এরূপ আচরণ ন্যায়সঙ্গত। এক্ষেত্রে পিতা-মাতা টর্টের দায়িত্ব থেকে মুক্তি পেয়ে থাকেন।

আমি ছোট ছোট আলোচনার মাধ্যমে টর্ট আইন সম্পর্কে সবাইকে একটা পরিষ্কার ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি। এই আলোচনা থেকে আপনারা কিছুটা উপকৃত হলেও আমার পরিশ্রম সার্থক হবে। সবাইকে ধন্যবাদ।

লেখক : সহকারী জজ, শরিয়তপুর জজ কোর্ট