ঢাকার দুই মেয়র ও রাজউক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও হাইকোর্ট

মশা নিধনে দুই সিটিকে ৪ দিন সময় দিল হাইকোর্ট

ওষুধের ডোজ বাড়িয়ে এডিস মশা নির্মূল এবং ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে আগামী মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) পর্যন্ত সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই সময়ের মধ্যে ওষুধ ব্যবহারে মশা নিধন হয়েছে কিনা সে বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন আদালত।

দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান দুই স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বক্তব্য শুনে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী তৌফিক ইনাম টিপু। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।

এ সময় মশা নিধনে তিনদিন ঝটিকা অভিযান চালানো হবে বলে হাইকোর্টে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। দুই সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা বৃহস্পতিবার দুপুরে এ প্রতিশ্রুতি দেন। পরে এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দিন ধার্য করেছেন আদালত।

এর আগে আদালতের তলবে হাজির হওয়া ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল (ডা.) মো. শরীফ আহমেদ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুনের বক্তব্য শোনেন হাইকোর্ট।

পরে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেন, সারাদেশের মানুষ ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত। ঘরে ঘরে মানুষ আক্রান্ত। ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশা নির্মূলে এক সপ্তাহের মধ্যে কার্যকর ওষুধ আনবেন। কীভাবে আনবেন, সে প্রক্রিয়া বলুন।

একই সঙ্গে বেলা ২টার মধ্যে দুই সিটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তা জানাতে বলেন।

আদালত বলেন, ঘরে ঘরে মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। অনেকে হাসপাতালে যায় না। সবাই হাসপাতালে গেলে এ সংখ্যা আরও বেশি হতো।

ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বেলা ১১টার দিকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য গত ২২ জুলাই নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। আদেশ অনুযায়ী সকাল সাড়ে ১০টায় দুই সিটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হাইকোর্টে হাজির হন। আদালত তাদের বক্তব্য শোনেন।

শুনানিতে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া ছড়াচ্ছে। আফ্রিকার মতো আমাদের দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা ওষুধ এনেছি। তবে তা কার্যকর হচ্ছে না।’

আদালত বলেন, ‘আপনারা যখন দেখলেন ওষুধ কাজ করছে না তখন নতুন পদক্ষেপ নেননি কেন? দ্রুত কীভাবে ওষুধ আনা যায় সে ব্যবস্থা নিয়ে বেলা ২টার মধ্যে আমাদের জানান।’

এর আগে মশাবাহিত রোগ ছড়ানোর বিষয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে গত ১৪ জুলাই হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ আদেশ দেন।

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নির্মূলে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তা এক সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা আকারে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের মাধ্যমে বিবাদীদের জানাতে বলা হয়েছিল। তার ধারাবাহিকতায় গত ২২ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সায়রা ফায়রোজ দুই সিটি কর্পোরেশনের পদক্ষেপ সম্পর্কিত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। তবে সে প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট হননি হাইকোর্ট। এ কার্যক্রমের বিষয়ে জানাতে দুই সিটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন।