কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়াই সরকারি চাকরিজীবীদের সাময়িক বরখাস্ত করা সংক্রান্ত ‘সরকারি চাকরি আইন-২০১৮’ এর ৩৯(১) ধারা কেন অবৈধ, সংবিধান পরিপন্থী ও বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুলে জারি করেন।
চার সপ্তাহের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, এনবিআর চেয়ারম্যান, রংপুর কর অঞ্চলের কর কমিশনার এবং একই জোনের সহকারী কমিশনারসহ (প্রশাসন) সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান ও ব্যারিস্টার রাজু মিয়া। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
এনবিআরের উচ্চমান সহকারী মো. রফিকুল ইসলাম পঞ্চগড়ে থাকাকালে চেক জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এ কারণে গত ১৫ মে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এই বরখাস্তের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে তিনি রিট আবেদন করেন। রিট আবেদনে বরখাস্তের বিষয় আইনের ৩৯(১) ধারা চ্যালেঞ্জ করা হয়।
রিট আবেদনকারীর আইনজীবীর বক্তব্য, সাময়িক বরখাস্তের আগে অভিযুক্তকে নোটিশ দেওয়ার বিধান নেই। তবে আইনে সংশ্লিষ্ট কর্মচারিকে ছুটিতে পাঠানোর সুযোগ আছে। কিন্তু রিট আবেদনকারীকে ছুটিতে না পাঠিয়ে দীর্ঘদিন সাময়িক বরখাস্ত করে রেখেছে।
আইনজীবী আরো বলেন, একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর তাকে সাময়িক বরখাস্তের আগে কারণ দর্শাতে নোটিশ দেওয়া উচিত। কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ পেতে পারেন। কিন্তু সেই সুযোগ না দেওয়া সংবিধানের ৭, ২৬, ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী।
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ এর ৩৯(১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনও কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের প্রস্তাব বা বিভাগীয় কার্যধারা রুজু করা হলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অভিযোগের মাত্রা ও প্রকৃতি, অভিযুক্ত কর্মচারীকে তার দায়িত্ব হতে বিরত রাখার আবশ্যকতা, তৎকর্তৃক তদন্ত কার্যে প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা ইত্যাদি বিবেচনা করে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করতে পারবে। তবে শর্ত থাকে যে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অধিকতর সমীচীন মনে করলে, এইরূপ কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করার পরিবর্তে, লিখিত আদেশ দিয়ে তার ছুটি প্রাপ্যতা সাপেক্ষে, উক্ত আদেশে উল্লিখিত তারিখ হতে ছুটিতে গমনের নির্দেশ প্রদান করতে পারবে।’