হাইকোর্ট

গর্ভের শিশুর পরিচয় প্রকাশ নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট

গর্ভবতী নারী ও অনাগত সন্তানের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গর্ভের শিশুর লিঙ্গপরিচয় জানার উদ্দেশ্যে পরীক্ষা ও তা প্রকাশ কেন অবৈধ ও বেআইনি হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

স্বাস্থ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের ৬ সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম এম জি সরোয়ার পায়েল।

গত ২৬ জানুয়ারি গর্ভের শিশুর লিঙ্গপরিচয় জানার উদ্দেশ্যে পরীক্ষা ও তা প্রকাশ বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে রিট করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।

এর আগে, গত ১ ডিসেম্বর গর্ভবতী নারী ও অনাগত সন্তানের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একই নিষেধাজ্ঞা চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। স্বাস্থ্য সচিব, নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সমাজকল্যাণ সচিবের প্রতি এ নোটিশ পাঠান অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।

নোটিশে তিন দিনের মধ্যে সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে গর্ভের শিশুর লিঙ্গপরিচয় জানার উদ্দেশ্যে পরীক্ষা ও তা প্রকাশ বন্ধে নির্দেশনা জারি করতে বলা হয়। নোটিশের জবাব না পাওয়ায় ওই রিট করা হয়।

আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, আমাদের দেশে এখনও বেশির ভাগ মানুষের ছেলে সন্তানই কাম্য। কারণ তারা মনে করেন, ছেলেরা বংশের ধারক, তারা আয় করে, বেশি শক্তিশালি। এমনকি অনেক নারীও মনে করে, ছেলে সন্তান তাদের ভবিষ্যতের সুরক্ষা দেবে। এ অবস্থায় যদি পরীক্ষার মাধ্যমে গর্ভে থাকা সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় জানা যায় এবং তা মা-বাবার কাঙ্ক্ষিত না হলে গর্ভবতী মায়ের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার ওপর প্রভাব ফেলে।

‘মা যদি হতাশায় ভোগে তবে বাচ্চার ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট গঠন/বিকাশ ঠিকভাবে হয় না। চীন-ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গর্ভে থাকা সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই বাংলাদেশে নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এটি বন্ধ হওয়া জরুরি।’

তিনি বলেন, গর্ভবতী মা ও শিশুর কল্যাণের জন্য, বা অনাগত সন্তানের সুস্থতা জানতে তারা যেকোনো পরীক্ষা করতেই পারেন। কিন্তু শুধু গর্ভে থাকা সন্তান ছেলে না মেয়ে তা জানার উদ্দেশ্যে ডাক্তারি পরীক্ষা বা ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্টে লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ কোনোভাবেই কাম্য নয়।