কারাদণ্ডের বদলে ৬ মাস বিনা বেতনে গান শেখানোর 'সাজা'
আদালত (প্রতীকী ছবি)

চকোরিয়ায় ৩ আসামির প্রবেশনের অগ্রগতি জানতে চান আদালত

মাদক মামলায় দণ্ডিত তিন আসামির প্রবেশন বিষয়ে কক্সবাজারের চকোরিয়ার সমাজসেবা কর্মকর্তার উপর অর্পিত নির্দেশনা প্রতিপালনের অগ্রগতি জানাতে আদেশ দিয়েছেন আদালত। প্রবেশন আদেশ প্রচারের দিন থেকে এ পর্যন্ত প্রদত্ত নির্দেশনার অগ্রগতির বিষয়ে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) কক্সবাজারের চকোরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব কুমার দেব এ আদেশ দেন।

এর আগে, গত ২১ অক্টোবর একই আদালত মাদক মামলায় তিন আসামিকে আগামী বছরের ১০ এপ্রিল পর্যন্ত মাদকবিরোধী প্রচারণা এবং স্কুলের বাচ্চাদের শিক্ষা উপকরণ কিনে দেওয়ার শর্তে সাজা স্থগিত করেন।

কিন্তু ওই আদেশ বাস্তবায়নের বিষয়ে অবগত নন জানিয়ে চকরিয়ার সমাজসেবা কর্মকর্তা একটি জাতীয় দৈনিকে বলেন, ‘মাদক মামলায় দণ্ডিত উল্লিখিত তিন আসামি এ পর্যন্ত কতটা কী আদেশ প্রতিপালন করেছে, সে বিষয়ে তিনি অবগত নন। কারণ, আদালতকে রিপোর্ট দিতে তিন মাস সময় আছে। আসামিরা তাকে অবহিত করেনি।’

নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট সমাজসেবা কর্মকর্তা উক্ত বিষয়ে আদেশপ্রাপ্ত হন। রায়ের আদেশ অংশে প্রবেশন অফিসার হিসেবে সমাজসেবা কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দাখিলের পাশাপাশি ‘নিয়মিত তত্ত্বাবধায়ন’ করারও নির্দেশ দেয়া হয়।

এজন্য পত্রিকায় প্রকাশিত ওই মন্তব্য আদালতের গোচরীভূত হলে এক মিছ মামলার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নির্দেশনা প্রতিপালনের অগ্রগতি জানাতে আদেশ দেয়া হয়। আদেশে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও সমাজসেবা কর্মকর্তার এমন মন্তব্য তাঁর উপর নির্দেশনার সরাসরি লঙ্ঘনসহ প্রবেশন কার্যক্রম পরিচালনায় শারীরিক বাধা বলে মনে করেন আদালত।

একইসঙ্গে আদেশ প্রচারের দিন থেকে এ পর্যন্ত প্রবেশনের অগ্রগতি অবগত হওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন আদালত। এছাড়া আদেশ প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৮৫ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৪ অগাস্ট চকোরিয়ার সোসাইটি পাড়াস্থ মো. রাজীব, মিনু আক্তার ও মমতাজ বেগমকে তাদের ঘর থেকে আটক করা হয়। এ সময় রাজীবের কাছ থেকে ২১টি ইয়াবা, মিনুর কাছ থেকে ২০০ গ্রাম গাঁজা এবং মমতাজের কাছ থেকে ২৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়। বিচার শেষে রায় ঘোষণার মাধ্যমে আদালত ওই তিন আসামির সকলকে দন্ডিত করে দন্ডের পরিবর্তে ১ বছরের প্রবেশন আদেশ দেন।

রায়ে মাদক বিরোধী প্রচারণায় আসামীরা কি বলবেন সেটাও ঠিক করে দিয়েছেন আদালত। আসামীরা সপ্তাহে দুইদিন চকোরিয়া অ্যাডভোকেট অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত হয়ে হ্যান্ড মাইকের মাধ্যমে আদালত নির্ধারিত বক্তব্য দিয়ে মাদক বিরোধী প্রচারণা চালাবেন বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।

রায়ে বলা হয়, চলতি বছরের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের ১০ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহের রবিবার ও বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত তাদের এ কাজ করতে হবে।

পাশপাশি সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার চকোরিয়া ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে একঘণ্টা মাদক বিরোধী প্রচারণা চালাতে হবে। এছাড়াও নির্ধারিত সময় অনুযায়ী চকোরিয়ার ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও আসামীদেরকে মাদক বিরোধী প্রচারণা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।