বিচারক প্রত্যাহার দাবিতে আইনজীবীদের আদালত বর্জনের ঘোষণা

রাজবাড়ী জেলা জজ আদালতের উদ্যোগে মার্কেট নির্মাণ কাজ বন্ধের দাবির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুই বিচারক প্রত্যাহারের দাবিও। দাবি পূরণ না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন রাজবাড়ী জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীরা। তাদের দাবি জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে মার্কেট নির্মাণ করছেন জেলা জজ আদালত।

এর আগে আইনজীবীদের সমাবেশ চলাকালে আদালতের কর্মচারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন তিন আইনজীবী। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজবাড়ীর আদালত চত্ত্বরে ঘটে এ ঘটনা। আহতরা হলেন- রাজবাড়ী জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এটিএম মোস্তফা মিঠু, আইনজীবী মেহেদী হাসান ও শিক্ষানবীশ আইনজীবী মো. সম্রাট।

জেলা জজ আদালতের উদ্যোগে চলমান মার্কেট নির্মাণ কাজ বন্ধের দাবিতে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজবাড়ী জেলা বার এর আইনজীবীরা আদালত বর্জন করে আদালত চত্ত্বরে বিক্ষোভ শেষে বার অ্যাসোসিয়েশনের সামনে সমাবেশ করেন। সমাবেশে বক্তব্য দেন রাজবাড়ী জেলা বার এসোসিয়েশনের সভাপতি প্রবীণ আইনজীবী স্বপন কুমার সোম, অ্যডভোকেট মাহবুব রহমান প্রমুখ।

জেলা বার এর সভাপতি অ্যডভোকেট স্বপন সোম সমাবেশে বলেন, সম্পূর্ণ অবৈধভাবে রাজবাড়ী বার অ্যাসোসিয়েশনের জায়গা দখল করে জেলা ও দায়রা জজ মার্কেট নির্মাণ করছেন। এ নিয়ে আমরা রাজবাড়ীর আদালতে মামলা করেছি। কিন্তু সে মামলা গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান কোনোটিই করেননি আদালত। এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা।
সমাবেশ শেষে আইনজীবীরা পুনরায় মিছিল নিয়ে নির্মাণাধীন মার্কেটের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় জেলা জজ আদালতের কর্মচারীদের সাথে বাকবিতণ্ডা ও কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। সংঘর্ষে আহত হন জেলা বার এর তিন আইনজীবী।

রাজবাড়ী সদর থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, আদালত চত্ত্বরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হাতাহাতি হয়েছে। পুলিশ দুই পক্ষকে নিবৃত্ত করে।

এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজবাড়ী জেলা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত আলীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এসএমএস পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

এদিকে ঘটনার পর জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে সংগঠনের নিজস্ব কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। ব্রিফিংয়ে আইজনজীবীরা দাবি করেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলাকালে জেলা জজ আদালতের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা তাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে।

তারা বলেন, যারা আইনজীবীদের উপর হামলা করেছে তারা সরকারি কর্মচারী। অফিস চলাকালীন সময়ে কোনোক্রমেই তাদের বাইরে থাকার কথা নয়। অথচ তারা আদালতের বাইরে এসে হামলা করেছে। তারা এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার এবং অবৈধ মার্কেট নির্মাণ কাজ বন্ধ না হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে ঘোষণা করেন।

এরপর বার অ্যাসোসিয়েশনের জরুরিসভা করেন আইনজীবীরা। এ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিলুফার সুলতানা এবং যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতের বিচারক পারভেজ শাহরিয়ারকে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তারা আদালত বর্জন করবেন।

সূত্র : সমকাল