সরকার ও চার পত্রিকাকে এস আলম গ্রুপের আইনি নোটিশ
আইনি নোটিশ

করোনাকালে মাতৃত্বকালীন ছুটি বৃদ্ধিসহ বৈষম্য দূরীকরণে নির্দেশনা চেয়ে আইনি নোটিশ

করোনাকালীন সময়ের জন্য সরকারি ও বেসরকারি কর্মজীবী নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাসের পরিবর্তে ১ বছর বৃদ্ধিসহ এই ছুটির বিষয়ে বৈষম্য দূরীকরণে সরকারকে একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

সোমবার (৫ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাম্মী আক্তারের পক্ষে আইনজীবী মো. জেআর খাঁন রবিন জনস্বার্থে এ নোটিশ পাঠান।

নোটিশে বলা হয়েছে, ‘করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) চীনের ওহান শহরে উৎপত্তি হলেও বর্তমানে এ ভাইরাস সারা পৃথিবীজুড়ে বিস্তৃত। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিও এ ভাইরাসের আওতামুক্ত নয়। এ ভাইরাস ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি এবং এক জনগোষ্ঠী থেকে অন্য জনগোষ্ঠীতে খুব সহজে সংক্রমিত হয়। এর প্রভাবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও প্রতিনিয়ত মানুষ মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছে, যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও কষ্টদায়ক বটে। বাংলাদেশ সরকার করোনার কু-প্রভাব থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করার লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত পদক্ষেপ গ্রহণ করে যাচ্ছে, যা প্রসংশার দাবিদার বটে।’

‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের নারীরাও কর্মক্ষেত্রসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। উল্লেখ্য, আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, শিক্ষামন্ত্রীও সম্মানীত নারী। অপরদিকে নারীদের মধ্যে অনেকেই বিচারপতি, বিচারক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ অনেক গুরুত্বপূর্ন পদে রয়েছেন। কর্মজীবী নারীরা তাদের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন।’

নোটিশে আরও বলা হয়, ‘বর্তমান করোনা ভাইরাসের কারণে অন্তঃসত্ত্বা নারীদেরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত কর্মক্ষেত্রে যেতে হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার ইতোপূর্বে বাংলাদেশ সার্ভিস রুল (পার্ট-১) এর রুল ১৯৭(১) সংশোধনক্রমে সরকারি কর্মজীবী নারীদের ক্ষেত্রে মাতৃত্বকালীন ছুটি ৪ মাসের পরিবর্তে ৬ মাস করলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে তা অত্যন্ত অপ্রতুল। কারণ, অন্তঃসত্ত্বা মা এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার গর্ভের শিশুসহ পরিবারের সকলেই আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বিদ্যমান থাকে। এতে করে একটি পরিবার পুরোপুরি হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়ে।’

‘একটি সুষ্ঠ সমাজ গঠনে নারীদের ভূমিকাও অগ্রগণ্য। নারীরা নানাভাবে সম্মানিত। তাই তারা সম্মানসহ নানারকম সুবিধা পাওয়ার হকদার বটে। অথচ উক্ত মাতৃত্বকালীন ছুটির নিয়ম অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মানছেন না। এতে করে সরকারি ও বেসরকারি কর্মজীবী নারীদের মধ্যে বৈষম্য বিদ্যমান। করোনা মহামারির মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি কর্মক্ষেত্রে নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি বৃদ্ধিসহ মাতৃত্বকালীন ছুটির বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি কর্মজীবী নারীদের মধ্যে বৈষম্য অবসানের লক্ষ্যে সরকারের সংশ্লিষ্টরা কোনোরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।’

তাই নোটিশপ্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে করোনাকালীন সময়ের জন্য সরকারি ও বেসরকারি কর্মজীবী নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাসের পরিবর্তে ১ বছর বৃদ্ধির অনুরোধ জানানো হয়েছে। পাশাপাশি মাতৃত্বকালীন ছুটির বিষয়ে সকল কর্মজীবী নারীদের মধ্যে বৈষম্য অবসানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।