রাজশাহী

বাগমারায় জনসাধারণের পুকুর লিজ দেওয়ার চেষ্টা, ইউএনও’র বিরুদ্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞা

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার কাতিলা গ্রামে জনসাধারণের ব্যবহার্য পাঁচটি পুকুর বিধিবহির্ভূতভাবে লিজ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত।

বাগমারা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের ০৬/১৮ অ.প্র. মামলায় বিচারক মারুফ আল্লাম এই আদেশ দেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী আব্দুর রাজ্জাক।

ইউএনও’র বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার কাতিলা গ্রামে সর্বসাধারণের ব্যবহার্য ৫টি পুকুর রয়েছে। স্থানীয় জনগণ তাদের কৃষিজমিতে সেচকাজের প্রয়োজনে এই পুকুরগুলো ব্যবহার করে। সরকারি জলমহাল নীতিমালা অনুযায়ী এই পুকুরগুলো সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য, যা বন্দোবস্ত বা লিজযোগ্য নয়। তারপরও ২০১৮ সালের দিকে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরকারি বিধি তোয়াক্কা না করেই লিজ দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এতে সেখানকার স্থানীয়রা বেশ সমস্যায় পড়েন। পরে সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে সিদ্দিকুর রহমানসহ কয়েকজন বাগমারা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ‘প্রতিনিধিত্বমূলক মামলা’ দায়ের করে ইউএনওর বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চান।

গত বুধবার (২৫ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে আদালত ইউএনওর বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। মূল মোকদ্দমাটি নিষ্পত্তি না হওয়া বাগমারা থানার কাতিলা মৌজার আরএস ২৯১২, ২৭৩১, ২৬৩৪, ৩০২৫ দাগের পুকুরগুলো লিজ প্রদান করা কিংবা জনসাধারণের ব্যবহারে বাধাবিঘ্ন সৃষ্টি করা থেকে বারিত করে ইউএনওর বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত।

নিষেধাজ্ঞার আদেশে আরও বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে এই সম্পত্তি যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বরাবর লিজ প্রদান করা হয়ে থাকে, তবে সেক্ষেত্রে সেই লিজগ্রহীতাগণও এই নিষেধাজ্ঞা আদেশ দ্বারা বারিত বলে গণ্য হবেন। সেই সাথে চলতি বছরের ১২ অক্টোবর মামলাটির চূড়ান্ত শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।

আদালতসূত্রে আরও জানা যায়, এই মামলাটিতে ইতিপূর্বেও ইউএনওর বিরুদ্ধে আদালত অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেছিলেন। তারপরও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইউএনও পুকুরগুলো লিজ দেন এবং পুকুর লিজ নেওয়া ব্যক্তিগণ পুকুর দখল করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের কারণে গতবছর অর্থাৎ ২০২০ সালের শেষ ভাগে কাতিলা গ্রামের স্থানীয়রা বাগমারা আদালতে লঙ্ঘনের আরেকটি মামলা (ভায়োলেশন মামলা) দায়ের করেন। বর্তমানে এই মামলাটি শুনানি পর্যায়ে আছে বলে আদালতসূত্রে জানা গেছে।