নির্বাচনের আগেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সংশোধনী আনা হবে: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক (ফাইল ছবি)

আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের জন্মদিন আজ

বাংলাদেশের ইতিহাসে পর পর দুবার আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী প্রথম ব্যক্তি অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের জন্মদিন আজ। ১৯৫৬ সালের আজকের (৩০ মার্চ) দিনে বর্তমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবার পানিয়ারূপ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

অ্যাডভোকেট আনিসুল হক হলেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, আইনজীবী। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের দুই বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রখ্যাত এই আইনজীবী ও রাজনীতিবিদের জন্মদিনে তাঁর কর্মময় সংক্ষিপ্ত জীবনী ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল-

জন্ম

আনিসুল হক তৎকালীন কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার (বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা) কসবার পানিয়ারূপ গ্রামে ৩০ মার্চ ১৯৫৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সিরাজুল হক (বাচ্চু মিয়া) এবং মাতা জাহানারা হক।

শিক্ষা জীবন

আনিসুল হক কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ঢাকার সেন্ট জোসেফ হাই স্কুল থেকে ও-লেভেল পাস করেন। এরপরে তিনি ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের মাধ্যমে এ-লেভেল সম্পন্ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্য বিভাগে ভর্তি হন। এ বিষয়ে তিনি স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাস করে মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করেন এবং লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে এলএলএম পাস করেন।

আইন পেশা

আনিসুল হক ১৯৮৫ সালের নভেম্বর মাসে ঢাকা জেলা আইনজীবী এবং ১৯৮৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০১ সালে তিনি আইনজীবী হিসাবে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ভর্তি হন এবং ২০১০ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী হন।

প্রয়াত অ্যাডভোকেট সিরাজুল হকের সাথে অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশক থেকে ২০১৪ সময়কালে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, শীর্ষস্থানীয় ও সংবেদনশীল ফৌজদারি মামলার আইনজীবী হিসাবে কাজ করেছিলেন।

বাবা সিরাজুল হকের মৃত্যুর পর আইন পেশা আর মা জাহানারা হককে নিয়েই সময় কাটে তার।

বাবার মৃত্যুর পরে আনিসুল হক বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা এবং জেল হত্যা মামলা উভয়ের প্রধান প্রসিকিউটর হয়েছিলেন। তার আইনি পরামর্শে বঙ্গবন্ধু খুনের মামলাটি শেষ হয় এবং বাংলাদেশের শীর্ষ আদালত রায় প্রদান করে।

আনিসুল হক দুর্নীতি দমন কমিশন বাংলাদেশের প্রধান আইনজীবী ও বিশেষ প্রসিকিউটরও ছিলেন। আনিসুল হক পিলখানা হত্যা মামলার প্রধান প্রসিকিউটর ছিলেন যা ২০০৯ সালে বাংলাদেশের বিডিআর বিদ্রোহের সাথে সম্পৃক্ত।

রাজনীতি

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে আনিসুল হক কসবা ও আখাউড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত জাতীয় সংসদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ৯ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে সংসদ সদস্য হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন। এরপরে, তাকে ১২ জানুয়ারি ২০১৪-এ শেখ হাসিনার তৃতীয় মন্ত্রীসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

আনিসুল হক ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৩ জানুয়ারি ২০১৯ সালে সংসদ সদস্য হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন এবং ৭ জানুয়ারি ২০১৯ সালে শেখ হাসিনার চতুর্থ মন্ত্রীসভার সদস্য শপথ গ্রহণ করেন। এ মন্ত্রীসভায় তাকে পুনরায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর পদে নিযুক্ত করা হয়। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে পর পর দুবার আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী প্রথম ব্যক্তি।

ব্যক্তিগত জীবন

আনিসুল হক ১৯৮৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর নুর আমতুল্লাহ রিনা হকের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। নুর আমতুল্লাহ রিনা হক ১৯৯১ সালের ২ জানুয়ারি সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। এরপর আর বিয়ের পিঁড়িতে বসেননি তিনি।