অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত কোনো বিচারককে ছাড় নয় : প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী

উচ্চ আদালতের ইট-পাথরে জড়িয়ে আছে অসংখ্য আইনি ও সাংবিধানিক ইতিহাস

পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেকটি উচ্চ আদালতই নিজ নিজ দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ উত্তরাধিকার বহন করে চলেছে বলে মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টও তার ব্যতিক্রম নয়। এর ইমারতগুলো কেবল বিচারের চিরায়ত পবিত্রতা ও ভাবগাম্ভীর্যের প্রতীকই নয়, সেগুলোর ইট-কাঠ-পাথরের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে অসংখ্য আইনি ও সাংবিধানিক ইতিহাস।

আজ বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের আধুনিক ও নান্দনিক ১২তলা ‘বিজয়-৭১ ভবন’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনিএসব কথা বলেন। গণভবন থেকে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে নবনির্মিত ভবনটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার প্রতিটি ক্ষেত্রে জাতির সুদীর্ঘকাল ব্যাপী লালিত স্বপ্নের চূড়ান্ত রুপায়নের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর জাতির জনক আমাদের উপহার দিয়েছিলেন জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, মানবাধিকার এবং ন্যায় বিচার বুননে সুবিন্যস্ত অভূতপূর্ব এক দলিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান। সেখানে সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে বিচারকাজ পরিচালনায় বিচারপতিগণের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতার সর্বোত্তম রক্ষা কবজ রাখা হয়েছে। ১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধুর দিব্যমান উপস্থিতিতে তাঁরই হাত ধরে সংবিধানের অধীনে গৌরবময় যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, সেদিন উচ্চ আদালত উদ্বোধন কালে জাতির জনক বলেছিলেন, ‘আইনের শাসন এদেশে হবে এবং আমাদের শাসনতন্ত্র যে হয়েছে আমরা সকলে মিলে চেষ্টা করব যাতে এটার একটা আদর্শ দেওয়া যায়। আদর্শ রক্ষা করায় সুপ্রিম কোর্টের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। আপনাদের সে ধরণের সাহায্য-সহযোগিতা প্রয়োজন আপনারা তা পাবেন। আপনাদের কোন কাজে আমরা ইন্টারফেয়ার করতে চাইনা। আমরা চাই দেশে আইনের শাসন কায়েম হোক।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, এই বক্তব্যে বিচার বিভাগ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর চিন্তাধারার মৌলিক অংশ প্রতিভাত হয়। যেখানে তিনি স্বাধীন ও গতিশীল বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠায় নিজের সংকল্প ব্যক্ত করেছেন। যুগের চাহিদা অনুযায়ী একটি শক্তিশালী বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠায় আইন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ইতিহাসের সত্যনিষ্ঠ বাস্তবতার নিরিখে বলতে হয়য় স্বাধীন বাংলাদেশের আইন ও বিচার কাঠামোর স্বার্থক সূত্রপাত করেছিলেন তিনি। জাতির পিতা এই ভূখণ্ডের যোগ্যতম অভিভাবক হিসেবে সুখী-সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সকল আইনি, প্রশাসনিক, রাজনৈতিক, নীতিগত, ভৌত, অভৌত ও কাঠামোগত প্রতিষ্ঠানগুলো মাত্র সাড়ে ৩ বছরে তৈরি করেছিলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জাতীয়, আন্তর্জাতিক, প্রাতিষ্ঠানিক, সামষ্টিক  রাষ্ট্রকরণসহ পরিবেশ, কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, শিক্ষা, সাহিত্য, সমুদ্র, পতাকা, যুদ্ধাপরাধী ও দালালদের বিচার ইত্যাদি এমন কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নাই যেখানে তিনি উপযুক্ত আইনি কাঠামো প্রণয়ন করেননি। বঙ্গবন্ধুর সময় প্রণীত শুধুমাত্র ১৯৭২ সনে পবিত্র সংবিধানসহ ১৫৬টি পূর্ণাঙ্গ আইন এর উৎকৃষ্ট প্রমাণ। অর্থাৎ ওই সময় তাঁর শাসনকালে প্রায় প্রতি দুই কর্মদিবসে ১টি করে পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণীত হয়েছে। নিঃসন্দেহে এটা বঙ্গবন্ধুর কল্পনাতীত পরিশ্রমের ফসল। তাঁর বিচার বিভাগ তথা আইনি ভাবনাগুলো আজকের একবিংশ শতাব্দীতে পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থায়ও ভীষণরকম প্রাসঙ্গিক এবং অনিবার্য হয়ে আমাদের সামনে এসেছে। আর তাঁর দেখানো পথ ধরে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশ আজ গোটা বিশ্ব দরবারে আপন মহিমায় অধিষ্ঠিত।

হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেকটি উচ্চ আদালতই নিজ নিজ দেশের  সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ উত্তরাধিকার বহন করে চলেছে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও তার ব্যতিক্রম নয়। এর ইমারতগুলো কেবল বিচারের চিরায়ত পবিত্রতা ও ভাবগাম্ভীর্যের প্রতীকই নয়, সেগুলোর ইট-কাঠ-পাথরের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে অসংখ্য আইনি ও সাংবিধানিক ইতিহাস।

তিনি বলেন, বর্তমানে ৩টি ভবন থেকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তার মধ্যে পুরাতন হাইকোর্ট ভবন ও প্রধান ভবনের ঐতিহাসিক তাৎপর্য অপরিসীম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় নতুন নির্মিত ১২তলা ‘বিজয়-৭১’ ভবনটিও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রকাশিত স্থাপত্য রীতি অনুসরণ করে নির্মাণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিজয়-৭১ নামকরণ মহান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধিকার আন্দোলন, ৬ দফা, ১১ দফা আন্দোলন এবং ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান পেরিয়ে একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধ অবধি ঘটনাবহুল তরঙ্গায়িত পথচলায় আত্মাহুতি দানকারী শহিদের চরম আত্মত্যাগের স্মরণে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আজকের এই স্মরণীয় মুহুর্তে আপনার আন্তরিক সহযোগিতার কথা স্মরণ না করলে আমরা অকৃজ্ঞ হব। আপনার সরকার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রথম চারতলা এনেক্স ভবন নির্মাণ করেন। যা আপনি নিজে ২০০১ সালে উদ্বোধন করেছিলেন। আপনার আন্তরিক প্রয়াসে কাকরাইলে একটি ২০তলা জাজেজ টাওয়ার নির্মিত হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণের আবাসিক সমস্যার সমাধান হয়েছে। আপনার উদার সহায়তায় দ্রুততার সাথে তৈরি হয়েছে সুরম্য বার কাউন্সিল ভবন। বিচার বিভাগের প্রতি আপনার হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসা ও মমত্ববোধ আমাদেরকে সবসময় অনুপ্রাণিত করে চলেছে।

তিনি বলেন, আপনি ২০১৯ সালে ৭ ডিসেম্বর বিচারকবৃন্দের জাতীয় সম্মেলনে (বিচার বিভাগীয় সম্মেলন) দেশে একটি পূর্ণাঙ্গ আইন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছিলেন। যা বিচারক, আইনজীবী ও ছাত্রমহলে ব্যাপক  উৎসাহের সৃষ্টি করে। উক্ত আইন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে বাংলাদেশের আইন শিক্ষার কার্যক্রমে ব্যাপক প্রসার ঘটবে।

তিনি আরও বলেন, আপনার সরকারের উদ্যোগে ইতিমধ্যে একটি ন্যাশনাল জুডিসিয়াল একাডেমি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। হতে চলেছে প্রত্যেক জেলায় সুরম্য চীফ জুডিসিয়াল ভবন। তাছাড়া দেশে এবং বিদেশে বিচারকবৃন্দের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা করে দিয়ে বিচারাঙ্গনে আপনি এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আমার শপথ গ্রহণের দিন আলোচনাক্রমে আদালতে আগত বিচারপ্রার্থী ও সাক্ষীগণ বিশেষ করে নারী বিচারপ্রার্থীদের বিশ্রাম এবং অন্যান্য সমস্যার কথা বিবেচনায় নিয়ে সাথে সাথে তাদের জন্য টয়লেটসহ ‘ক্লায়েন্ট শেড’ নির্মাণের কথা বলতে গিয়ে উল্লেখ করেছিলেন যে, ‘এটা অনেক আগেই হওয়া উচিৎ ছিল।’ আপনার এই আশ্বস্তকরণ সকল বিচারপ্রার্থীদের মনে আপনার মানবপ্রীতির অন্যন্য উদাহরণের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। মামলা-মোকদ্দমায় জর্জরিত মানুষ আদালত প্রাঙ্গণে কিছুক্ষণের জন্য হলেও নিরাপদস্থল ও স্বস্তি খুঁজে পাবে ‘ক্লায়েন্ট শেডে’। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের মসজিদ ভেঙ্গে সুশোভিত চার তলা মসজিদ নির্মাণ প্রক্রিয়া ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আপ্লূত করেছে।

তিনি বলেন, এদেশের মানুষ করোনাকালীন সময় আপনার গৃহীত পদক্ষেপসমূহ বিশেষ করে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার আইন তড়িৎ গতিতে প্রণয়ন এবং ভার্চুয়াল আদালতের প্রতিষ্ঠা ও প্রয়োগের মাধ্যমে বিচারকার্য পরিচালনার সুযোগ করে দেওয়ায়, বিচারকগণ, আইনজীবীগণ এবং বিচারপ্রার্থী জনগণ আপনাকে চিরকাল স্মরণ করবে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনি শুনলে খুশি হবেন যে, মাননীয় বিচারপতিগণ গত দুই সপ্তাহে তাদের গ্রীষ্মকালীন ছুটি ভোগ না করে, সবচেয়ে জটিল ডেথ রেফারেন্স মোকদ্দমা শুনানি করে চলেছেন। গতকাল পর্যন্ত ৩২টি কেসে রায় হয়ে গেছে। প্রত্যেক জেলায় বিশেষ করে পুরাতন মোকদ্দমা নিষ্পত্তিতে মনিটরিং সেল গঠন করে মনিটর করা হচ্ছে। ফলে মোকদ্দমা নিষ্পত্তির বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন প্রয়োজন আইনজীবীদের পরিপূর্ণ সহযোগিতা এবং সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধি।

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার সক্রিয় প্রচেষ্টায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ও এটুআই প্রকল্পের আওয়তায় ‘ভিশন ডিজিটাল জুডিসিয়ারি’ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এই প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ২০০০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়কালে মামলার নথিসমূহ স্ক্যান করে ডিজিটাল আর্কাইভিংয়ের মাধ্যমে সংরক্ষণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়াও এ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে কোম্পানি ও অ্যাডমিরালটি সংক্রান্ত মামলাসমূহ ই-ফাইলিং –এর মাধ্যমে দায়ের করা হচ্ছে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আদালতে প্রাণের ভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠায় ইতোমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের বাংলায় রায় দেওয়ার পরিমাণ বেড়েছে। এছাড়া আপনার সরকারের সহযোগিতায় ভারত থেকে আনা ‘আমাদের ভাষা’ নামক অনুবাদ সফটওয়্যারের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের ইংরেজি রায়সমূহ সাধারণ মানুষ বোঝার জন্য বাংলা অনুবাদ করে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে নিয়মিতভাবে প্রচার করা হচ্ছে।

হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, একইসাথে ২ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্প বাস্তবায়ন আপনার সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে। আজকের পরিবর্তির বিশ্ব ব্যবস্থা যুগসন্ধিক্ষণে ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে তথ্য ও প্রযুক্তির হাত ধরে বিচার বিভাগেও নানান ধরণের সেবার স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও উপযোগিতা নিশ্চয়ই নতুন আশায় আমাদের বাঁচতে শেখাবে।

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্টের রেকর্ডসমূহ সংরক্ষণের জন্য একটি বহুতল রেকর্ড ভবন নির্মাণ করা একান্ত আবশ্যক। কনিস্টিটিউশনাল ম্যান্ডেট হিসেবে আমাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব হল রেকর্ড সংরক্ষণ করা। আমরা ভারত বিভাগের পূর্বেরসহ লক্ষ লক্ষ রেকর্ড সংরক্ষণ করছি। রেকর্ডরুমগুলোতে কোনভাবেই রেকর্ড সংরক্ষণের সংকুলান করা যাচ্ছে না। এছাড়া একটি বহুতল প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা প্রয়োজন। আমাদের অফিসার ও স্টাফদের বসার জায়গা দিতে পারি না। এই দুইটি ভবন নির্মাণে পূর্বের ন্যায় আপনার সানুগ্রহ সহায়তা ও সহযোগিতা কামনা করছি।

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, আপনি জানেন, বার এবং বেঞ্চ একটি জুডিসিয়ারির একটি পাখির দুটি ডানা, একটি শক্তিশালী বার শক্তিশালী জুডিসিয়ারির জন্য অপরিহার্য। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের বর্তমান সংখ্যা ৯ হাজার ৩০২ জন। তাদের বসার জায়গার সংকুলান বর্তমান বার বিল্ডিংগুলোতে একদমই অসম্ভব। তাদের বসবার এবং সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের সবার। এজন্যও বারের নতুন ভবন তৈরি করা একান্ত প্রয়োজন। গণতন্ত্র আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের সার্বিক মঙ্গলের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ ও সুদৃঢ় অঙ্গীকার নিঃসন্দেহে আগামী প্রজন্মের পথচলার পাথেয় হয়ে থাকবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। এছাড়া স্বাগত বক্তৃতা করেন আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার। এসময় সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ও আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স এক্সটেনশন (বর্ধিত) ভবন নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৫৮ কোটি চার লাখ ২২ হাজার টাকা। যার পুরোটাই বহন করছে সরকার। এনেক্স ভবনের পশ্চিম পাশে ১৮ হাজার ১৩৪ বর্গমিটার জায়গায় নির্মিত হলো এ ভবন।

এতে রয়েছে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, বিচারপতিদের জন্য ৫৬টি চেম্বার, ৩২টি এজলাসকক্ষ (কোর্ট রুম), আলাদা দুটি লিফট, আধুনিক জেনারেটর ও দোতলা বিদ্যুতের সাব-স্টেশন। এছাড়া এ ভবনে ৩২টি ডিভিশন বেঞ্চ ও বিচারপতিদের চেম্বার ছাড়াও ২০টি অফিসকক্ষ এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের দাপ্তরিক কক্ষ রয়েছে।