অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা এবং সাবেক কূটনীতিক মোহাম্মদ খায়রুজ্জামান
অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা এবং সাবেক কূটনীতিক মোহাম্মদ খায়রুজ্জামান

সাবেক হাইকমিশনার খায়রুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন

ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আলোচিত মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের সাবেক হাইকমিশনার মোহাম্মদ খায়রুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক।

আজ মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) দুদক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের কমিশন সভা থেকে এই মামলা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই মামলাটি দায়ের করা হবে।

সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনে হাইকমিশনার হিসেবে কর্মরত থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ১ কোটি ৫৮ লাখ ২৭ হাজার ৯১৩ টাকা আত্মসাৎ করেন খায়রুজ্জামান।

আত্মসাতের বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক চিফ অ্যাকাউন্টস অফিসার মো. মনোয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটির বিভাগীয় তদন্তেও প্রমাণিত হয়েছে। ওই তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মো. খায়রুজ্জামানের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় সরাসরি মামলা অনুমোদন দেয় দুদক।

খায়রুজ্জামান মালয়েশিয়ায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শরণার্থী হিসেবে বসবাস করছেন। বাংলাদেশের অনুরোধে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাকে মালয়েশিয়া পুলিশ গ্রেফতার করে। যদিও পরে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন তিনি।

খায়রুজ্জামান সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর। ১৯৭৫ সালের জেল হত্যা মামলার অভিযুক্ত আসামি ছিলেন তিনি। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর খায়রুজ্জামান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জেল হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে নাম এলে সে সময় ফিলিপিন্সের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে থাকা খায়রুজ্জামানকে দেশে ডেকে পাঠানো হয়। ওই বছর ২৪ সেপ্টেম্বরে তাকে গ্রেফতার করে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়।

পরে ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে জামিনে মুক্ত হন খায়রুজ্জামান। ২০০৩ সালের ৪ মে তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে খালাস পেয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালে তাকে হাইকমিশনার করে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়। ২০০৯ সালে তাকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ সরকার। তবে ঝুঁকি মনে করে কুয়ালালামপুরেই থেকে যান খায়রুজ্জামান। সংগ্রহ করেন জাতিসংঘের শরণার্থী কার্ড।