দুই আইনজীবীর রিমান্ড: অধস্তন আদালতের নথি তলব করলেন হাইকোর্ট
বাংলাদেশের উচ্চ আদালত

ফেসবুক থেকে উসকানিমূলক ও ক্ষতিকর কনটেন্ট সরাতে রুল

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক থেকে উসকানিমূলক ও ক্ষতিকর কনটেন্ট সরাতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ সোমবার (১১ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালককে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল। অন্যদিকে বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খোন্দকার রেজা-ই রাকিব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

গত বছরের ২০ ডিসেম্বর ফেসবুকে থাকা ক্ষতিকর কনটেন্ট সরাতে চারজনের পক্ষে এ রিট করেন আইনজীবী তাপস কান্তি বল। রিটকারী চারজন হলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক এস এম মাসুম বিল্লাহ, আইনজীবী জর্জ চৌধুরী, ঢাকার বাসিন্দা সেলিম সামাদ ও ভিক্টর রায়।

মার্ক জাকারবার্গসহ পাঁচ জনকে আইনি নোটিশ

গত বছরের ১৮ নভেম্বর চার ব্যক্তির পক্ষে রেজিস্ট্রি ও ই-মেইলে আইনি নোটিশ পাঠান আইনজীবী তাপস কান্তি বল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক থেকে ক্ষতিকর কনটেন্ট সরাতে এর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গকে বিবাদী করা হয় লিগ্যাল নোটিশে।

দুর্গা পূজার সময় গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার একটি পূজা মণ্ডপে মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআন রাখার কথিত অভিযোগের একটি ভিডিও ও ছবি ফেইসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এ ধরনের ‘বিভ্রান্তিকর, ভুল, মিথ্যা তথ্যের’ লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও প্রায়ই ফেইসবুকে ‘ভাইরাল’ হচ্ছে বলে মন্তব্য করা হয় নোটিশে।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বরাত দিয়ে সেখানে বলা হয়েছে, গত ১৪ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের ২৭টি জেলায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি-ঘর, উপাসনালয়ে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় সারা দেশে অন্তত ৯ জন নিহত হন।

ফেইসবুকে ‘ছড়িয়ে দেওয়া’ এ ধরনের ভডিও, অডিও, ছবি পোস্টকে কেন্দ্র করে এর আগেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছে, সে কথাও তুলে ধরা হয় নোটিশে।

সেখানে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো এ ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলা প্রতিহত করতে ‘সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ’ হয়েছে, তাতে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে।

অথচ এ ধরনের বিভ্রান্তিকর, ভুল, ভুয়া, মিথ্য খবর, ভিডিও, অডিও, ছবির প্রচার-প্রকাশ বন্ধ করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী তাদের বিধিবদ্ধ দায়িত্ব।

নোটিশের জবাব না পেয়ে পরে হাইকোর্টে এই রিট দায়ের করা হয়। রিটে কোনো ধরনের বিলম্ব ছাড়াই দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের অপব্যবহার ও কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

জাকারবার্গ ছাড়াও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালকে বিবাদী করা হয় রিটে।