নড়াইলে শিক্ষক লাঞ্ছনা : বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রিট

নড়াইলে শিক্ষক লাঞ্ছনা : বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নড়াইলের কলেজশিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। নড়াইলের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ সোমবার (১৮ জুলাই) বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

রুলে নড়াইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ওই ঘটনাসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের উপস্থিতিতে ‘জনতার বিচার’ বন্ধে এবং লাঞ্ছনার শিকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সুরক্ষায় বিবাদী ব্যক্তিদের ব্যর্থতা—নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, নড়াইলের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বিবাদী ব্যক্তিদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, ব্যারিস্টার অনিক আর হক ও অ্যাডভোকেট মো. শাহিনুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ ও ফারজানা শম্পা।

গত ৩০ জুন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট পূর্ণিমা জাহান এ রিট দায়ের করেন।

প্রসঙ্গত, ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সাময়িক বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার ছবি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নড়াইল সদরের এক কলেজছাত্রের পোস্টকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ১৮ জুন কলেজের অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেওয়া হয়৷

স্থানীয় ব্যক্তিদের ভাষ্য, নড়াইল সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ওই ছাত্র ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার পরদিন কলেজে গেলে কিছু মুসলমান ছাত্র তাঁকে ওই পোস্ট মুছে ফেলতে বলেন৷ ওই সময় অধ্যক্ষ ওই ছাত্রের ‘পক্ষ নিয়েছেন’ এমন রটনা ছড়িয়ে পড়লে সেখানে উত্তেজনা তৈরি হয়৷

এ সময় উত্তেজিত ছাত্ররা অধ্যক্ষ ও দুজন শিক্ষকের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন৷ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে তাঁদেরও সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে কলেজের কিছু ছাত্র ও স্থানীয় ব্যক্তিরা পুলিশের উপস্থিতিতে স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেন৷