সস্তায় হোটেল ভাড়া করে দেওয়ার নামে পর্যটক হয়রানী, দণ্ডিত ১৯
কক্সবাজারে পর্যটক হয়রানীর দায়ে দন্ডিত ১৯ প্রতারক

কক্সবাজারে পর্যটক হয়রানীর দায়ে ১৯ জনের কারাদণ্ড

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : কম দামে হোটেলে রুম ভাড়া করে দেওয়ার নামে পর্যটকদের হয়রানী ও প্রতারণা করার অভিযোগে টমটম (ই-বাইক), অটোরিকশা, রিক্সার ড্রাইভারসহ ১৯ জন দালালের প্রত্যেককে তিন দিন করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবুল মনসুর সিদ্দিকী শুক্রবার (৫ আগস্ট) বিকেলে প্রতারক ও দালালদের এ সাজা প্রদান করেন।

কক্সবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশেক এলাহী শাহজাহান নুরী ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম-কে এ তথ্য জানিয়েছেন।

দন্ডিতরা হলেন- রবিউল হাসান (২০), ইমরান (২১), জাফর আলম (৩৮), মো. আব্দুলাহ (১৮), ইসমাইল (২৪), ইব্রাহীম (৩৭), নুর আলম (২৬), চাঁদ মিয়া (১৯), নজু আলম (৩৫), রুবেল (২৬), জুয়েল মিয়া (৩২), সাদেকুর (২৬), সৈয়দ নুর (৩০), সাহিদ (২৬), হেলাল উদ্দিন (৪০), সাগর (২৩), গিয়াস উদ্দিন (৩৩), সৈয়দ আলম (৩৬) এবং মো. হোসেন (৪৭)। দন্ডিত সকলেই ইজিবাইক (টমটম), অটোরিক্সা ও রিক্সা চালক। মূলত পর্যটকের বেশ ধরে ১৯ দালালকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ট্যুরিষ্ট পুলিশ। একইসাথে দালালদের ১৪ টি টমটম (ই-বাইক), অটোরিকশা জব্দ করা হয়েছে।

দন্ডিত আসামীরা কখনও কখনও পর্যটকদের ব্যাগ ধরে টানাটানিসহ হেনস্থা করে, জোর করে তাদের গাড়িতে তুলে নেওয়া, ব্ল্যাকমেইলিং করে দালালদের কন্ট্রাক্ট করা আবাসিক হোটেলে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি অপরাধ করতো। তাদের কারণে পর্যটন নগরীর মান ও সুনাম ক্ষুন্ন হতো। এ রকম অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

পরে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ ইসমাইল অভিযোগকারী হয়ে পুলিশ আইনের ৩৪ (৩) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার কক্সবাজার সদর মডেল থানার নন এফআইআর মামলা নম্বর : ১৭৪/২০২২ ইংরেজি।

শুক্রবার বিকেলে গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের কক্সবাজার সদর মডেল থানা থেকে আদালতে চালান দিলে আদালতের ছুটিকালীন বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবুল মনসুর সিদ্দিকী প্রত্যেক আাসমীকে তিন দিন করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।

পর্যটকদের ভ্রমণ নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ এ অভিযান চালায় বলে জানান কক্সবাজার রিজিয়ন ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি মোঃ জিল্লুর রহমান।

তিনি আরো বলেন, হাঙ্গর মোড় সহ কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ পয়েন্টে টমটম, অটোরিকশা চালকসহ বেশকিছু দালালচক্রের বিরুদ্ধে পর্যটকদের নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে। ব্ল্যাকমেইলিং, জোর করে বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে যাওয়া, পর্যটকদের মালামাল ছিনতাই, ইভটিজিং, এমনকি ধর্ষণের মত ঘটনার সাথেও দালাল চক্রটি জড়িত।

অভিযোগ রয়েছে, কিছু নিম্নমানের আবাসিক হোটেল-কটেজ মালিক নির্ধারিত কমিশনের চুক্তিতে দালালচক্র নিয়োজিত করেছে। বিশেষ করে সিএনজি, রিকশা ও টমটম চালকদের টার্গেট করে এসব কাজে ব্যবহার করছে হোটেল পরিচালকরা। কক্সবাজার শহরের মোড়ে মোড়ে পর্যটক টার্গেট করে বসে থাকে তারা। শহরের বাস টার্মিনাল, কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবণী পয়েন্টে তাদের দৌরাত্ম্য খুব বেশি।

পর্যটন শহরের আবাসিক হোটেল কেন্দ্রিক এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার রিজিওন এর এসপি মোঃ জিল্লুর রহমান।