'বেশি স্মার্টনেস দেখাবেন না, কারাগারে পাঠিয়ে দেব'
হাইকোর্ট

পিতল পাচার বন্ধে হাইকোর্টে রিট

জাহাজভাঙা শিল্পের পিতল পাচার প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। একই সাথে প্রত্যেকটি জাহাজ থেকে প্রাপ্ত পিতলের পরিমাণ নিবন্ধন, জাহাজভাঙা শিল্প-কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতকরন বাধ্যতামূলক বীমা পলিসি গ্রহণ, জাহাজভাঙা শিল্প কারখানায় ১৮ বছরের নিচের কোন ব্যক্তিকে নিয়োগ প্রদান না করা এবং শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠন ল’ এন্ড লাইভ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট এর পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সোমবার (৩১ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির রিট আবেদনটি দায়ের করেন।

বাণিজ্য সচিব, বাংলাদেশ ট্রেড এবং ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান, এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে পিতলের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। পিতল দিয়ে তৈরি হচ্ছে দামি আসবাব, বাথরুম ফিটিংস তথা দৈনন্দিন ব্যবহার্য অনেক সামগ্রী। পিতলের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার শিল্প প্রতিষ্ঠান। এসব পিতলের একটি বড় অংশের যোগান আসে আন্তর্জাতিক দরপত্রে ক্রয়কৃত বিভিন্ন জাহাজ থেকে শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে সংগৃহীত পিতল থেকে। বাকিটা সংগৃহীত হয় স্থানীয়ভাবে।

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পিতলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় এসব পিতল পাচার হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের পিতল নির্ভর কারখানাগুলোকে বেশিদামে ভারত এবং অন্যদেশ থেকে পিতল আমদানি করতে হয়। ফলে আমাদের দেশে পিতল সামগ্রির মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সাথে পিতল নির্ভর শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধের উপক্রম হচ্ছে। যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির উপর প্রভাব ফেলছে।

বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী পিতল পাচারের একটি সিন্ডিকেট নিজেরা লাভবান হয়ে পিতল পাচার করে দেশের ক্ষতি করছে যা বেআইনি এবং কোনভাবেই কাম্য নয়।

বাংলাদেশের জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২ অনুযায়ী দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশ করার কথা বলা হয়েছে। কাজেই দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশে অবশ্যই জনস্বার্থ রক্ষায় পিতল পাচার বন্ধ করতে হবে।

এছাড়া শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড গুলোতে শিশু শ্রমিক নিয়োগ করা হয় যা আইনসংগত নয়। জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প কারখানায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার অপ্রতুলতা এবং নিরাপত্তা সামগ্রীর অভাবে প্রতিবছর বহু সংখ্যক শ্রমিক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে হতাহত হন। যার তেমন কোন প্রতিকার নেই। আইনে সুস্পষ্ট ভাবে বাধ্যতামূলকশ্রমিকদের জন্য বীমা করার বিধান থাকলেও সেটা করা হচ্ছে না।

ইতিপূর্বে নোটিশ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিবাদীদের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। অন্যথায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও নোটিশে জানানো হয়েছিল। কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় পিটিশনটি ফাইল করা হয়েছে।