প্রকাশ্যে নাচ-গান যুগলের, ১০ বছরের কারাদণ্ড দিল ইরানের আদালত
প্রকাশ্যে নাচ-গান যুগলের

প্রকাশ্যে নাচ-গান যুগলের, ১০ বছরের কারাদণ্ড দিল ইরানের আদালত

ইরানের বিখ্যাত তেহরান ল্যান্ডমার্কের সামনে এক যুগল একান্তে নাচ-গান করায় তাঁদের ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ওই যুগল আমির মোহাম্মদ আহমাদি ও তাঁর বাগদত্তা আস্তিয়াজ হাঘিঘি, দু’জনেরই বয়স ২০-র কোঠায়।

আজাদি টাওয়ারের সামনে ওই যুগলের রোম্যান্টিক নাচের ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। ভাইরাল ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, নাচের সময় তেহরানের আজাদি টাওয়ারের সামনে আহমাদি তাঁর বাগদত্তাকে বাতাসে তুলে ধরেছেন।

ভাইরাল ভিডিওয় হাঘিঘিকেও দেখা গিয়েছে হিজাব বা স্কার্ফ ছাড়াই। ঘটনার সময় এই যুগল ইরানের সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোয় রীতিমতো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। ভাইরাল ভিডিওটি হিজাবের বিরুদ্ধে ও বৃহত্তর অধিকারের পক্ষে ইরানবাসীর আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে প্রচারিত হয়েছিল।

এরপরই নভেম্বরে তাঁদের গ্রেফতার করে ইরানের পুলিশ। বিচারের পর মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) তাঁদের ১০ বছর ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশপাশি তাদের ইন্টারনেট ব্যবহার এবং দেশ ছাড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

এমনটাই জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট নিউজ এজেন্সি (HRANA)।

ওই নিজউ এজেন্সি যুগলের ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, আদালতে ওই দম্পতির কোনও আইনজীবী ছিল না। তারপরও বিচার প্রক্রিয়া এগিয়েছে। শুধু তাই নয়, আবেদনের পরও ওই যুগলকে জামিন দেওয়া হয়নি।

শুধু তাই নয়, হাঘিঘিকে রাখা হয়েছে কুখ্যাত মহিলা জেল কারাচাকে। অতীতে বারবার এই কুখ্যাত কারাগারের বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগ উঠেছে। তারপরও তেহরানের বাইরে এই মহিলা কারাগারেই রাখা হয়েছে হাঘিঘিকে।

ওই যুগলের কারাবাসের খবর স্বীকার করে নিয়েছেন আজাদি টাওয়ারের কর্মীরা। তাঁরা এই মামলায় সাক্ষী হিসেবে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানে জনসমক্ষে নাচ ও গান এবং নারী-পুরুষের প্রকাশ্যে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা নিষিদ্ধ।

সম্প্রতি সেখানে মাশা আমিনি নামে এক যুবতীকে পোশাকবিধি ভঙ্গের দায়ে ব্যাপক মারধরের অভিযোগ ওঠে। যার জেরে ওই যুবতী প্রাণ হারান। তার জেরে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ইরান।

সেই বিক্ষোভের মধ্যেই সামনে আসে আমির মোহাম্মদ আহমাদি ও তাঁর বাগদত্তা আস্তিয়াজ হাঘিঘির ভিডিও। আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানে সেই সময় হিজাব ছাড়াই বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন মহিলারা। কারণ, আমিনিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল হিজাব না-পরার অপরাধে।