একই আদেশের বিরুদ্ধে দুই আবেদন, আইনজীবীকে তলব
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

তারেকের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে হাইকোর্টে আইনজীবীদের বাগ-বিতণ্ডা

প্রিন্ট, ইলেকট্রনিকস ও অনলাইন গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার বন্ধের বিষয়ে জারি করা রুল শুনানি নিয়ে আদালতের এজলাস কক্ষে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে বাগ-বিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে।

আজ মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিচারপতি খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ ঘটনা ঘটে।

এদিন রুল শুনানির জন্য দিন ঠিক করতে আদালতে যান সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা। অন্যদিকে বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালসহ বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরাও আদালতে যান।

শুনানির শুরুতে হাইকোর্ট বেঞ্চের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান জানতে চান তারেক রহমানকে তো নোটিশ দেওয়া হয়নি, তাহলে কীভাবে রুল শুনানি হবে?

এসময় রিটকারি আইনজীবী কামরুল ইসলাম বলেন, তাকে কোনো ঠিকানায় পাওয়া যায়নি।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, রাজনৈতিক বিষয় আদালতে আনা উচিত হবে না। রাজনৈতিক বিষয় কোর্টের বিষয় নয়।
একপর্যায়ে তারেক রহমানকে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি বলে মন্তব্য করেন কয়েকজন আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবী।

তখন আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল ইসলাম সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেন বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা।

এসময় আদালতের মধ্যে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়। একপর্যায়ে আদালতের হস্তক্ষেপে শান্ত হন দুই পক্ষের আইনজীবীরা।

পরে হাইকোর্ট বলেন, রুলস অনুযায়ী তারেক রহমানকে অবশ্যই নোটিশ দিতে হবে। তবে সেটি কোন প্রক্রিয়ায় এর উপায় খুঁজতে হবে। বিকল্প পদ্ধতি বের করতে হবে।

আদালত বলেন, এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) আদেশ দেওয়া হবে।

এর আগে গত ২ আগস্ট হাইকোর্টে এ আর্জি (ম্যানশন স্লিপ) উপস্থাপন করেন সাবেক মন্ত্রী ও সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম ও অ্যাডভোকেট নাসরিন সিদ্দিকী লিনা।

সেদিন এ বিষয়ে উপস্থাপন করা আবেদনটি হাইকোর্টের বিচারপতি খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে কজলিস্টে (কার্যতালিকায়) এলে শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন আইনজীবীরা।

প্রসঙ্গত, আইনের দৃষ্টিতে পলাতক থাকা অবস্থায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য বা বিবৃতি সব ধরনের গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন এ আদেশ দেন।

রুলে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রকাশ ও প্রচার নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

একইসঙ্গে তারেক রহমানের বিদেশে অবস্থানের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানাতে পররাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি তারেক রহমানের পাসপোর্টের মেয়াদের বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) একটি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।