চট্টগ্রামে খাল–নালায় পড়ে হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে চসিককে লিগ্যাল নোটিশ
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন

চট্টগ্রামে খাল–নালায় পড়ে হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে চসিককে লিগ্যাল নোটিশ

চট্টগ্রাম নগরীর উন্মুক্ত নালা-নর্দমা ও খালে পড়ে মৃত্যুবরণকারীদের পরিবারকে ও আহতদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে।

আজ সোমবার (১১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম জজ কোর্টের পাঁচ আইনজীবীর পক্ষে এ নোটিশ প্রেরণ করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ রিদুয়ান।

ওই পাঁচ আইনজীবী হলেন- অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ফজলুল সাব্বির (অভি), মো. এমরান হোসেন, মোহাম্মদ রিয়াজুর রহমান, জোবায়ের হোসেন শাওন এবং মো. তাওহিদুল করিম।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিবকে এ নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়, গত ২৯ আগস্ট দেশের বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোতে ‘চট্টগ্রামে খাল–নালায় মানুষ মরছে, তবু নিরাপত্তাবেষ্টনী উঠছে না’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ২৭ আগস্ট বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে চট্টগ্রাম নগরের উত্তর আগ্রাবাদের রঙ্গীপাড়া এলাকার একটি নালায় পড়ে নিখোঁজ হয় দেড় বছরের শিশু ইয়াছিন আরাফাত। ১৬ ঘন্টা পর নালার আবর্জনার নিচ থেকে ইয়াছিনের নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া গত ৭ আগস্ট চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১ নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ফতেহপুর ইসলামিক সংলগ্ন বাদামতলা এলাকার নালায় পড়ে মৃতু হয় কলেজ ছাত্রী নিপা পালিতের।

২৬ আগস্ট, ২০২১ সালে নগরের মুরাদপুএ চশমা খালে পা পিছলে পড়ে তলিয়ে যান সবজি বিক্রেতা ছালেহ আহমেদ। তাঁর মরদেহ এখনো পাওয়া যায়নি। একই বছরের ৬ ডিসেম্বর চশমা খালে তলিয়ে যায় শিশু মো. কামাল উদ্দিন। ৩ দিন পর মির্জা নগরের খাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ওই বছরের ২৭ সেপ্তেম্বর নগরের আগ্রাবাদের মাজার গেট এলাকায় ফুটপাত থেকে পিছলে নালায় পড়ে মৃত্যু হয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী মেহেরীন মাহমুদ সাদিয়ার।

দৈনিক নয়া দিগন্তে ‘চট্টগ্রামে উন্মুক্ত খাল ও নালায় পড়ে ৩ বছরের প্রাণ গেছে ৯ জনের: নির্বিকার চসিক’ চলতি বছরের ৩০ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সময় টেলিভিশনে ‘চট্টগ্রামে নালায় পড়ে মৃত্যু, দায় কার?’ ২০২১ সালের ২০ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তথ্য মতে চট্টগ্রামে নালা-নর্দমায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থান রয়েছে পাঁচ হাজারের বেশী।

দেশের প্রচলিত আইনি বিধি-বিধান ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে সুস্পষ্টভাবেই প্রতীয়মান হয় যে এসব ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদানে সিটি কর্পরেশন দায়বদ্ধ।

এছাড়া নোটিশে চট্টগ্রাম নগরীর উন্মুক্ত নালা-নর্দমাগুলোতে অতিসত্বর স্ল্যাব বসানো, ভাঙ্গা স্ল্যাবগুলো অপসারণ পূর্বক নতুন স্ল্যাব পুনঃস্থাপন, অরক্ষিত খালের পাড়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণ, দুর্ঘটনা প্রবণ ও মৃত্যুঝুঁকি রয়েছে এমন স্থানগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।

নোটিশপ্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় দেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী যথাযথ আইনি প্রতিকার চাওয়া হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।