সুপ্রিম কোর্ট, বাংলাদেশ

ঢাকার জজকোর্ট ও আইনজীবী সমিতি ভবন এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন মোবাইল নেটওয়ার্ক নিশ্চিতের নির্দেশ

ঢাকার অধস্তন আদালত (জজকোর্ট) ও আইনজীবী সমিতি ভবন এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন মোবাইলফোন নেটওয়ার্ক সেবা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আগামী ২৩ এপ্রিল মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোকে অগ্রগতি রিপোর্ট এফিডেভিট আকারে হাইকোর্টে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি শেষে সোমবার (৪ মার্চ ) হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।

আদালতে এদিন রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির (পল্লব)। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার অ্যাডভোকেট বায়েজীদ হোসাইন, নাঈম সরদার, ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার ও অ্যাডভোকেট মো. সুজন শেখ।

এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মানবাধিকার সংগঠন ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট বায়েজীদ হোসাইন, নাঈম সরদার, ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার, ও ঢাকা জজকোর্টের অ্যাডভোকেট মো. ফাহাদ খান শাওনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির (পল্লব) রিটটি দায়ের করেন ।

রিটে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসি, গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ও টেলিটককে বিবাদী করা হয়েছে।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২৪ ঘণ্টার সময় দিয়ে ঢাকা জজকোর্ট ও আইনজীবী সমিতি ভবন এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন মোবাইলফোন নেটওয়ার্ক সেবা নিশ্চিত করতে দেশের সব বেসরকারি টেলিকম অপারেটরের কাছে লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় রিটটি দায়ের করা হয়। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন হাইকোর্ট।

রিটে বলা হয়েছে, ঢাকা জজ কোর্ট দেশের লাখো বিচারপ্রার্থী মানুষের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। ঢাকা আইনজীবী সমিতি এশিয়ার বৃহত্তম বার অ্যাসোসিয়েশন। আদালত প্রাঙ্গণে প্রতিদিন লাখো মানুষের জমায়েত হয়। এখানে হাজার হাজার আইনজীবী তাদের পেশাগত কাজ করছেন। বিচারপ্রার্থীসহ দেশের অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন এই অঙ্গনে আসছেন। শতাধিক বিচারক তাদের বিচারিক কাজ করছেন। এখানে আগত প্রত্যেকেই তাদের প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন অপারেটরের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেন। পেশাগত কাজে অনেকেই তাদের মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।

সম্প্রতি এই অঙ্গনের অনেক জায়গায় কোনো নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। কিছু কিছু জায়গায় নেটওয়ার্ক থাকলেও তা অত্যন্ত দুর্বল। মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট কানেকশন না থাকায় আদালতের বিচারিক এবং আইনজীবীদের পেশাগত কাজে ভীষণ বিঘ্ন ঘটছে। একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ এবং ইন্টারনেট সেবা থেকে সবাই বঞ্চিত হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত এ সমস্যার সমাধান প্রয়োজন।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব বলেন, ঢাকা জজকোর্ট এলাকায় হাজার হাজার আইনজীবী, বিচারক, ও বিচার প্রার্থীরা বিচরণ করেন। কিন্তু সেখানে মোবাইল কোম্পানিগুলো নেটওয়ার্ক সঠিকভাবে পাওয়া যায় না। যার পরিপ্রেক্ষিতে রিট দায়ের করা হয়েছিল। শুনানি শেষে হাইকোর্ট যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা যুগান্তকারী। আশা করছি মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো হাইকোর্টের নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করবে।