হবিগঞ্জে বিচার বিভাগের সহায়ক কর্মচারীদের শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি পালন

হবিগঞ্জে বিচার বিভাগের সহায়ক কর্মচারীদের শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি পালন

বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন, হবিগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে আজ সোমবার (০৫ মে) সকাল ৯:৩০ থেকে ১১:৩০ পর্যন্ত জেলা ও অধস্তন আদালতসমূহে কর্মরত সহায়ক কর্মচারীগণ শান্তিপূর্ণভাবে দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেন।

গত ১৯ এপ্রিল জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসোসিয়েশন কর্তৃক দুটি প্রধান দাবির কথা উত্থাপন করা হয়:

১. বিচার বিভাগের জন্য সুপ্রিম কোর্টের অধীন পৃথক সচিবালয় গঠন এবং অধস্তন আদালতের সহায়ক কর্মচারীদের বিচার বিভাগের সহায়ক কর্মচারী হিসেবে গণ্য করে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা।
২. বিদ্যমান ব্লকপদ বিলুপ্ত করে যুগোপযোগী পদ সৃজন, পদোন্নতির সুযোগ নিশ্চিতকরণ ও স্বতন্ত্র নিয়োগবিধি প্রণয়ন।

সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথক হলেও শুধুমাত্র বিচারকদের জন্য পৃথক বেতন কাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা প্রবর্তন করা হয়। অথচ, একই দপ্তরে কাজ করা সত্ত্বেও সহায়ক কর্মচারীরা এখনো জনপ্রশাসনের বেতন কাঠামোর আওতায় রয়েছেন।

আরও পড়ুনকক্সবাজারে বিচার বিভাগীয় কর্মচারীদের কর্মবিরতি পালন

এসোসিয়েশনের দাবি, দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে বৈষম্যের শিকার এই কর্মচারীরা নতুন অন্তবর্তীকালীন সরকারের বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের প্রতিশ্রুতির আলোকে আবারও আশায় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু সরকার কর্তৃক গঠিত বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন যৌক্তিকতা স্বীকার করলেও কমিশনের প্রতিবেদনে সহায়ক কর্মচারীদের জুডিশিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করার কোনো সুপারিশ না থাকায় হতাশা তৈরি হয়েছে।

তাদের অভিযোগ, পদোন্নতির সুযোগ যেখানে অতি সীমিত, সেখানে প্রশাসনিক দায়িত্বে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পদায়নের সুপারিশ পদোন্নতির পথ আরও সংকুচিত করবে। অন্য দপ্তরের কর্মচারীদের মতো ক্যারিয়ার অগ্রগতির সুনির্দিষ্ট পথ না থাকায়, বহু কর্মচারী তিন/চার দশক চাকরি করে পদোন্নতি ছাড়াই অবসরে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুনবিচার বিভাগীয় সহায়ক কর্মচারীদের এক ঘণ্টার কর্মবিরতির ঘোষণা

প্রসঙ্গত, সচিবালয়ে অফিস সহায়ক পদে যোগ দিয়ে উপসচিব পর্যন্ত পদোন্নতির সুযোগ যেমন রয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে অফিস সহকারী পদে যোগ দিয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার পর্যন্ত পদোন্নতির সুযোগ রয়েছে; কিন্তু অধস্তন আদালতের কর্মচারীদের জন্য তেমন কোনো সুযোগ নেই।

এসোসিয়েশন দাবি করে, ‘জেলা জজ আদালত ও অধস্তন আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা, ১৯৮৯’ এবং ‘জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি ও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসির আদালতের নিয়োগ বিধিমালা, ২০০৮’ এখনো হালনাগাদ হয়নি। ফলে বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে এগুলোর কোনো মিল নেই।

শেষে হবিগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মোঃ জিয়াউল হক ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ গোলাম হাদী সরকারের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করে জানান,

“বিচার বিভাগের সহায়ক কর্মচারীরা আর কোনোভাবে অবহেলিত থাকতে চায় না। কেন্দ্র ঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। দাবি আদায়ে হবিগঞ্জ জেলা সর্বাত্মক প্রস্তুত।”