জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধিতে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ মঙ্গলবার (২ অক্টোবর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ শুনানি করেন দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
এদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী কায়সার কামাল পাসওভার (সংক্ষিপ্ত সময় চেয়ে আবেদন) নেন। তারা সময় নিয়ে চলে যান। এরপর দুদক আইনজীবী এ মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধিতে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শুরু করেন। আদালত এ শুনানি বুধবার (৩ অক্টোবর) পর্যন্ত মুলতবি করেছেন। বুধবার দুপুরে ফের শুনানি শুরু হবে।
এর আগে গত ১৩ আগস্ট জামিনের মেয়াদ ৩ অক্টোবর পর্যন্ত বর্ধিত করে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা আপিলের শুনানি ২ অক্টোবর পর্যন্ত মুলতবি করেছিলেন হাইকোর্ট। গত ১২ জুলাই এ আপিল শুনানি শুরু হয়।
এ মামলায় ছয় আসামির মধ্যে খালেদা জিয়াসহ তিনজন কারাবন্দি। বাকি তিন আসামি পলাতক। খালেদা জিয়া ছাড়া মামলার বাকি দুই আসামি হলেন- মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ।
পলাতক তিনজন হলেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান মামলাটিতে খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন।
একইসঙ্গে খালেদার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।
রায় ঘোষণার ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রায়ের সার্টিফায়েড কপি বা অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি তারা এ আবেদন করেন।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ এবং অর্থদণ্ড স্থগিত করে নথি তলব করেন। এরপর ৭ মার্চ অপর আসামি মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামালের আপিলও শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট।
পরে ২৮ মার্চ খালেদার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। ১০ মে আরেক আসামি শরফুদ্দিনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন আদালত। এখন তিন আসামির আপিল ও দুদকের আবেদনের রুল উক্ত আদালতে শুনানি হচ্ছে।
মামলায় খালেদা জিয়াকে ১২ মার্চ হাইকোর্ট চার মাসের জামিন দেন। চার মাস শেষে ১৯ জুলাই পর্যন্ত তার জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। পরে দ্বিতীয় দফায় ২৬ জুলাই, তৃতীয় দফায় ৩১ জুলাই, চতুর্থ দফায় ১৩ আগস্ট পর্যন্ত বর্ধিত করেছেন হাইকোর্ট।
এদিকে হাইকোর্টে এ মামলা নিষ্পত্তিতে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিয়েছেন আপিল বিভাগ।