পিএইচডি ও সমমানের ডিগ্রী প্রদানের ক্ষেত্রে জালিয়াতি বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টের রিট দায়ের করা হয়েছে। পাশপাশি রিটে আবেদনে পিএইচডি গবেষণা অভিসন্দর্ভের (থিসিস) অনুমোদন দেওয়ার আগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র (এনওসি) নেওয়ার বিধান করারও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার (২২ জানুয়ারি) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন।
রিটে শিক্ষা সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়েছে।
একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি গবেষণার ৯৮% নকল’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ যুক্ত করে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে বলে ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান লিংকন।
রিটকারী আইনজীবী জানান, আগামী সপ্তাহে হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে রিটের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার ‘ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি গবেষণার ৯৮% নকল’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ৯৮ শতাংশ হুবহু নকল পিএইচডি গবেষণা অভিসন্দর্ভের (থিসিস) মাধ্যমে ‘ডক্টরেট’ ডিগ্রি নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ওষুধপ্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম লুৎফুল কবীর।
২০১৪ সালের দিকে ‘টিউবারকিউলোসিস অ্যান্ড এইচআইভি কো-রিলেশন অ্যান্ড কো-ইনফেকশন ইন বাংলাদেশ: অ্যান এক্সপ্লোরেশন অব দেয়ার ইমপ্যাক্টস অন পাবলিক হেলথ’ শীর্ষক ওই নিবন্ধের কাজ শুরু করেন আবুল কালাম লুৎফুল কবীর। কাজ শুরু করার এক থেকে দেড় বছরের মাথায় ২০১৫ সালে অভিসন্দর্ভের কাজ শেষ করে ফেলেন লুৎফুল কবীর। একটি পিএইচডি অভিসন্দর্ভের কাজ শেষ করার জন্য সাধারণত তিন থেকে সাড়ে তিন বছর লাগে। কিন্তু দ্রুত কাজ শেষ করে প্রথমে সহতত্ত্বাবধায়কের স্বাক্ষর ছাড়াই ডিগ্রির জন্য অভিসন্দর্ভটি জমা দেন লুৎফুল কবীর। সহতত্ত্বাবধায়কের স্বাক্ষর না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবন থেকে তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে লুৎফুল কবীর গবেষণার সহতত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক ফারুককে ‘অনেক অনুনয়-বিনয়’ করে তাঁর কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে এলে ২০১৫ সালেই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে তা অনুমোদিত হয়।
আবুল কালাম লুৎফুল কবীর বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের দায়িত্বে আছেন।
অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান বলেন, আজ (বুধবার) পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ নজরে এনে এ বিষয়ে নির্দেশনা চাইলে আদালত নিয়মিত আবেদন করার নির্দেশ দেন। পরে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট ফাইল করেছি।
দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষকের এমন জালিয়াতি দুঃখজনক উল্লেখ করে এ ধরণের জালিয়াতি বন্ধ না হলে জাতি অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।