ঢাকার রাস্তা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও গাড়ি পার্কিং বন্ধে হাইকোর্টের রায় পালন না করার অভিযোগ এনে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান ও ঢাকার দুই সিটি মেয়রকে আদালত অবমাননার নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে নোটিশটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ না নিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, এইচআরপিবির পক্ষে ২০১৫ সালে এ নিয়ে জনস্বার্থে রিট আবেদন করা হয়। তখন আদালত রুল জারির পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। রুলে অনুমোদনহীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অবৈধ স্থাপনা অপসারণের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। একইসঙ্গে কোন কোন ভবনে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় নকশাবহির্ভূত স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে, রাজউক চেয়ারম্যানকে ৬০ দিনের সে তালিকা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ নির্দেশের পর রাজউক গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকার কয়েকশ’ ভবনের তালিকা আদালতে দাখিল করে। পরে বিভিন্ন সময় রাজউক প্রতিবেদন দিয়ে আদালতকে জানায়, ২০১৬ সাল থেকে তারা এসব অবৈধ স্থাপনা অপসারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে। পরে রুলের চূড়ান্ত শুনানি করে ২০১৯ সালের ৩ জুলাই রায় দেন হাইকোর্ট।
রায়ে রাজধানীতে সড়কের পাশে যেসব ভবনে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় নকশা বহির্ভূতভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকান তৈরি করা হয়েছে সেগুলো এক মাসের মধ্যে ভেঙে ফেলতে ভবন মালিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়। ভবন মালিকরা তা না করলে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে তা করতে রাজউককে নির্দেশ দেওয়া হয়। আর ভাঙার খরচ ভবন মালিকের কাছ থেকে আদায় করতে রায়ে বলে দেন আদালত।
এছাড়া বাংলা ও ইংরেজি দৈনিকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি দিতে ও মাইকিং করতে রাজউককে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তা থেকে অননুমোদিত পার্কিং সরাতে আইনগত পদক্ষেপ নিতে সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দেন আদালত।
রাজউক, সিটি করপোরেশন রায় বাস্তবায়নে কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায় এবং রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আদালতে প্রতিবেদন না দেওয়ায় এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানান আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।