রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও নিহত ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চেয়ে রিট দায়ের করা হয়েছে।
মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের স্ত্রী ইসরাত রহমান ও জাহাঙ্গীর আলমের ভাই মিজানুর রহমান এ রিট দায়ের করেছেন। রিটকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন : ড. তাহের হত্যায় ২ আসামির ফাঁসি কার্যকরে আইনগত বাধা নেই
গত ৩ মে আসামিদের রিভিউ আবেদন খারিজের রায় প্রকাশিত হয়। ফলে এ দণ্ডিত দুই আসামির ফাঁসি কার্যকরে আইনগত কোনো বাধা নেই। তারা শুধু রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার সুযোগ পাবেন বলে জানান আইনজীবীরা।
রিভিউ আবেদন খারিজের রায় প্রকাশ হওয়ায় নিয়মানুযায়ী, সুপ্রিম কোর্ট থেকে এ রায় রাজশাহীর আদালতে পাঠানো কথা। রাজশাহীর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করবেন।
এর আগে গত ২ মার্চ অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলমের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
ওইদিন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৮ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিভিউ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এন গোস্বামী ও অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।
আদালতে ড. তাহেরের স্ত্রী সুলতানা আহমেদ, মেয়ে অ্যাডভোকেট সেগুফতা আহমেদ, তাদের পরিবারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি ও শাকিলা রওশন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন : ড. তাহের হত্যাকাণ্ড নজিরবিহীন মহাঅপরাধ : আপিল বিভাগ
এর আগে গত বছরের ৫ এপ্রিল অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের ফাঁসি বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যুদণ্ড এবং অন্য দুই আসামির যাবজ্জীবন দণ্ডও বহাল রাখেন আদালত। যাবজ্জীবন সাজা বহাল থাকা দুজন হলেন নাজমুল আলম ও আব্দুস সালাম।
পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করেন আসামিরা।
অধ্যাপক ড. তাহের হত্যা মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুতবিচার আদালত চারজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং দুইজনকে বেকসুর খালাস দেন। আসামিরা এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন।
২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল হাইকোর্ট দুই আসামির ফাঁসির দণ্ড বহাল রাখেন এবং অন্য দুই আসামির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন।
এ রায়ের বিরুদ্ধেও আসামিরা আপিল করেন। তবে গত বছরের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ তা খারজি করে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন।
২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় নৃশংসভাবে হত্যার শিকার অধ্যাপক ড. তাহেরের মরদেহ। এর দুই দিন পর ওই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।