আদালত থেকে নথি চুরি ও বিচারকের আদেশ মুছে ফেলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এক নারী আইনজীবীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) আসামির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে যাওয়া আইনজীবীর নাম শামিমা আক্তার শিউলী। তিনি ঢাকা আইনজীবী সমিতির নিয়মিত সদস্য।
মঙ্গলবার আইনজীবী শামিমা আক্তার শিউলী আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিনের আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার প্রেক্ষাপট
গত ২৫ অক্টোবর সকালে রোকসানা আলম বাদী হয়ে নূরে আলম পিন্টুসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে একটি পিটিশন মামলার আবেদন করেন। এ মামলার আইনজীবী ছিলেন শামীমা আক্তার শিউলী।
বিচারক বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ ও নথি পর্যালোচনা করে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা না পাওয়ায় আবেদনটি খারিজ করে দেন। পরে আইনজীবী শিউলী সেদিন আনুমানিক ২টায় আদালতে উপস্থিত হয়ে আবেদন খারিজের বিষয়টি জানতে পারেন।
তখন আইনজীবী বলেন ‘আমি স্যারের (বিচারকের) সঙ্গে দেখা করতে চাই এবং মামলাটি টেক ব্যাক নিব।’ সঙ্গে সঙ্গেই আইনজীবী তার একটি ভিজিটিং কার্ড বেঞ্চ সহকারীকে দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানান।
ম্যাজিস্ট্রেট দেখা না করে অন্য মামলার জন্য ফের এজলাসে উঠলে আইনজীবী শিউলী ম্যাজিস্ট্রেটকে বলেন, ‘স্যার, আমার ২০/২৫ বছরের অভিজ্ঞতা। মামলাটি খারিজ করলে আমার মান ইজ্জত থাকবে না। বাদী আমার এলাকার। দয়া করে মামলাটি টেক ব্যাক করেন।’
তখন ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘ইতোমধ্যে মামলাটির আদেশ প্রদান করা হয়েছে।’ এরপর ওই আইনজীবী চলে যায়।
পরে আইনজীবীর সহকারী মামলার নথিটি দেখার কথা বলে আদালত থেকে নথি চুরি করে নিয়ে যায়। বেঞ্চ সহকারী আইনজীবীর চেম্বারে গিয়ে তার কাছে নথিটি ফেরত চাইলে শিউলী নথিটির ওপরে পেনসিল দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের লেখা আদেশ ইরেজার দিয়ে মুছে ফেলে ও তার নামীয় ওকলাতনামা এবং নথিতে থাকা কোর্ট ফি ছিড়ে রেখে দেয়।
এ অভিযোগে গত ২৯ অক্টোবর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-২২’র বেঞ্চ সহকারী মো. রাকিব চৌধুরী বাদী হয়ে মামলাটি করেন।