আদালত (প্রতীকী ছবি)
আদালত (প্রতীকী ছবি)

বেতন কর্তনের আদেশের পর সাক্ষী দিতে আদালতে হাজির সরকারি কর্মকর্তা

সরকারী সাক্ষীকে বার বার সমন ও আদালতে হাজির হওয়ার বিভিন্ন আদেশ দেওয়া সত্ত্বেও হাজির না হওয়ায় বেতন কর্তনের নির্দেশ দেয়ার পর রাজশাহীর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হলেন দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বাদল চন্দ্র হাওলাদার।

আজ বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহীর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মেহেদী হাসান তালুকদারের আদালতে হাজির হয়ে একটি নাশকতার মামলায় রাষ্ট্রের মানিত সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বাঘা থানার এসি ল্যান্ড অফিসে বিএনপি-জামাত ও শিবির কর্তৃক আগুন দেওয়ার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। আগুন দেয়ার ফলে স্টোর রুমের ভিতরে রক্ষিত ২টি মটর সাইকেল, প্রায় ৭,০০০ পুরাতন পাঠ্যপুস্তুক আগুনে পুড়ে যায় ও অবশিষ্ট পাঠ্যপুস্তুক ফায়ার সার্ভিস কর্তৃক আগুন নেভানোকালে পানিতে ভিজে বিনষ্ট হয় এবং উপজেলা ভূমি অফিসের নিষ্পত্তিকৃত পুরাতন কিছু নামজারী নথি, নিষ্পত্তিকৃত কয়েকটি বিবিধ মামলার নথি ও পুরাতন পত্রগ্রহণ রেজিস্টার, পুরাতন পত্র প্রেরণ রেজিস্টার ও কয়েকটি এস.এফ এর অফিস কপি আগুনে পুড়ে যায়। উক্ত নাশকতার ঘটনায় প্রায় ২,৭৩,৪০০/- টাকার ক্ষতি হয়।

পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ১২ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ৩৪ জন আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। উক্ত সময় বাদল চন্দ্র হাওলাদর ঐ কর্মস্থলে বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পাশাপাশি সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে সাক্ষী মান্য করেননি। বিষয়টি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবীব রঞ্জু আদালতের নজরে আনলে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাঁকে সাক্ষ্য প্রদানের নিমিত্তে সমন প্রদান করেন। উক্ত সাক্ষীকে ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ও ৩ অক্টোবর দুই দফা জেলা প্রশাসক, রাজশাহী ও মন্ত্রী পরিষদ সচিবের মাধ্যমে সমন দেয়া হলেও আদালতে হাজির হননি।

অবশেষে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মেহেদী হাসান তালুকদার হাইকোর্টের আদেশ মোতাবেক তাঁর বেতন কর্তনের আদেশ দেন। উক্ত আদেশ প্রাপ্তির পর আজ আদালতে সাক্ষ্য দিলেন সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৭ মে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ফৌজদারী মামলায় সরকারী কর্মচারী সাক্ষ্য প্রদান করতে হাজির না হলে তাদের বেতন আটকে দেওয়ার পাশাপাশি বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন।