মামুনুল ও বাবুনগরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমতি চেয়ে আবেদন

খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী মামলা রুজুর জন্য সরকারের অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।

আজ রোববার (৬ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জিশান মাহমুদ।

আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করে অ্যাডভোকেট জিশান মাহমুদ ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৬ ধারা বিধানানুযায়ী দণ্ডবিধির ১২৩ক/১২৪ক/৫০৫ ধারায় মাওলানা মামুনুল হক গং দের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী মামলা রুজু করতে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছি।

আবেদনে বলা হয়, গত ১৩ নভেম্বর খেলাফত মজলিশের নেতা মাওলানা মামুনুল হক ধাকায় এক অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য তৈরির তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি সরকারকে হুঁশিয়ারি করে বলেছিলেন, ভাস্কর্য নির্মাণের সিদ্ধন্ত থেকে সরে না দাঁড়ালে তিনি আরেকটি শপলা চত্বরের ঘটনা ঘটাবেন এবং ওই ভাস্কর্য ছুঁড়ে ফেলবেন।

অন্যদিকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী গত ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক মাহফিলে ‘কোন ভাস্কর্য তৈরি হলে তা টেনে হিঁচড়ে ফেলে দেয়া হবে’ বলে হুমকি দিয়েছেন।

তাদের ঔদ্ধত্যপুর্ণ বক্তব্য গত কয়েকদিন যাবত বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে ব্যাপকভাবে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়ে আসছে। তাদের ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যের রেশ ধরে তাদের অনুসারীরা বাংলাদেশের সংবিধান স্বীকৃত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কুষ্টিয়াইয় নির্মানাধীন ভাস্কর্য গত শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) রাতের আঁধারে ভাস্কর্য এর ডান হাত ও পুরো মুখমণ্ডল, বা হাতের অংশবিশেষ ভেঙ্গে ফেলে দুর্বৃত্তরা।

আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের অপর নাম। বাংলাদেশের সংবিধান স্বীকৃত জাতির জনক। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে আঘাত হানা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের সামিল।

মাওলানা মামুনুল হক ও জুনায়েদ বাবুনগরীদের প্রত্যক্ষ মদদে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে আঘাত হেনেছে দুর্বৃত্তরা। যা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বিরাগ ও ঘৃণা সৃষ্টির অশুভ অভিপ্রায়ে করা হয়েছে বিধায় তারা দণ্ডবিধির ১২৩ক/১২৪ক/৫০৫ ধারার আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

এমতাবস্থায় সংবিধানের প্রতি এক আস্থাশীল আইনজীবী এবং স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে উজ্জীবিত দেশ প্রেমিক বাঙালি হিসেবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে আগ্রহী।

প্রসঙ্গত, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৬ ধারার বিধানানুযায়ী রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আমলে নেয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে সরকার কর্তৃক অনুমোদন প্রয়োজন। তা না হলে মামলা রুজু করলেও তা আমলে না নিয়ে খারিজ করে দিতে পারেন আদালত।