কক্সবাজারে যাঁরা জেলা জজের দায়িত্ব পালন করেছেন
বিচারক (ছবি - প্রতীকী)

৯ মাসেও নিয়োগ পাননি ১৬৬ সহকারী বিচারক

দেশে মামলার তুলনায় বিচারকের সংখ্যা কম থাকলেও গত নয় মাস ধরে আদালতে বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়া আটকে আছে। ফলে সুপারিশপ্রাপ্ত ১৬৬ জন সহকারী বিচারক নিয়োগ না পেয়ে হতাশায় ভুগছেন।

জানা গেছে, বিচার কাজ পরিচালনার জন্য প্রতিবছর সার্কুলার জারি করে সহকারী বিচারকদের (জজ) নিয়োগ দেয় সরকার। বিচারিক আদালতে বিচারক নিয়োগের এটাই প্রাথমিক ধাপ।

দশম বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন (বিজেএস) পরীক্ষার সার্কুলার জারি হয় ২০১৬ সালের ৩ মার্চ। প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০ এপ্রিল এবং ফল প্রকাশ হয় ২১ এপ্রিল। এরপর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ৩০ জুলাই থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত। লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয় ৬ ডিসেম্বর এবং মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত। পরে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ পায় ২৯ জানুয়ারি।

ফল প্রকাশের পর ১১৫টি পদের বিপরীতে বিচারক পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয় ২০৭ জনকে। যাদের মেডিক্যাল পরীক্ষাও ২০১৭ সালের ৫ ও ৬ মার্চ সম্পন্ন হয়। কিন্তু এরপরও ঝুলে থাকে তাদের নিয়োগের প্রত্যাশিত গেজেট প্রকাশ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দশম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক শিক্ষার্থী গনমাধ্যমকে বলেন, ‘ফলাফল প্রকাশের পর প্রায় একবছর পার হয়ে গেছে। গেজেট না হওয়ায় সামাজিক ও পারিবারিকভাবে আমাদের বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব গেজেট প্রকাশ করে আমাদের নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

এদিকে দশম বিজেএস পরীক্ষার গেজেট প্রকাশ না করে ইতোমধ্যে একাদশ বিজেএস পরীক্ষায়ও ১৪৩ জন সহকারী জজকে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এর ফলে একইসঙ্গে বিজেএস-এর দুটি ব্যাচ এখন সুপারিশপ্রাপ্ত।

জানা গেছে, দশম বিজেএস পরীক্ষায় সুপারিশপ্রাপ্ত ২০৭ জনের মধ্যে ৪০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ ও গোয়েন্দা ভেরিফিকেশনের পর নেতিবাচক প্রতিবেদন এসেছে। ফলে আপাতত গেজেটে তাদের নাম প্রকাশ করা হবে না। তবে অবশিষ্ট ১৬৬ জনের তালিকা অপেক্ষমাণ থাকলেও দীর্ঘ নয় মাসেও গেজেট হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘চাকরির ফলাফল পাওয়ার পর মনে হয়েছিল বেকারত্ব ঘুচলো। কিন্তু ফল প্রকাশের পর একবছর পার হলেও এখনও বেকার আছি। কবে এই বেকারত্ব ঘুচবে বুঝতে পারছি না।’

২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছিলেন, ‘শিগগিরই ১৬৬ জন বিচারকের গেজেট হবে।’ এরপর গত ৯ জানুয়ারি আরেকটি অনুষ্ঠানে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘গেজেট না হওয়ার বিষয়টি আজকেই জানলাম। আশা করি, এই মাসেই গেজেট হবে।’

গেজেটের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘গেজেট না হওয়ার কারণ আমি জানি না। তবে এ বিষয়ে এখন তেমন কিছু বলতে পারছি না।’

একই বিষয়ে আইন ও বিচার বিভাগীয় সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক গনমাধ্যমকে বলেন, ‘অনেক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গেজেট প্রকাশ করতে হয়। আশা করছি, ১০-১৫ দিনের মধ্যেই গেজেট প্রকাশ হবে।’ বাংলা ট্রিবিউন