আনসার বিদ্রোহ: খালাসপ্রাপ্তদের চাকরিতে পুনর্বহাল নিয়ে রায় ২ আগস্ট
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত

আপিল বিভাগে নারায়ণগঞ্জের যুগ্ম জেলা জজের নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা

১০ বছর আগের একটি মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ থাকার পরেও সে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় কড়া সমালোচনা করে নারায়ণগঞ্জের যুগ্ম জেলা জজ মো: সফিকুল ইসলামকে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

আপিল বিভাগের তলবে আজ মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চে ওই বিচারক হাজির হন। এরপর বিষয়টি শুনানির জন্য উঠলে প্রধান বিচারপতি ওই যুগ্ম জেলা জজকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আর কতদিন? আরও কি দশ বছর লাগবে এই মামলাটি নিষ্পত্তি করতে?’

এসময় ওই যুগ্ম জেলা জজ বলেন, মাই লর্ড। এই মামলাটি এর আগে আমার কাছে ছিল না। এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনার কাছে এটা কতদিন? ওই বিচারক উত্তরে বলেন, একবছর মাই লর্ড।

এসময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘১ বছরেও আপনি পারেননি? কাজ কর্ম করেন, না শুধু গল্প গুজব করেন কোর্টে?’ এসময় যুগ্ম জেলা জজ মো: সফিকুল ইসলাম বলেন, মাই লর্ড। আমার আদালতে ৭ হাজারের অধিক মামলা রয়েছে।

এরপর তিনি আপিল বিভাগের কাছে ( আনকন্ডিসনাল অ্যাপোলজি) নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরে আপিল বিভাগ আগামী ১৫ এপ্রিলের মধ্যে তাকে মামলাটি নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের দাবি করা ১২ মাসের বিল অবৈধ ঘোষণা চেয়ে একটি প্রতিষ্ঠান নিম্ন আদালতে মামলা করে। পাশাপাশি তিন লাখ টাকা করে বিল দিতে অনুমতি দেওয়ার আর্জি জানানো হয়। কিন্তু নিম্ন আদালত ২০০৭ সালের ১৫ মার্চ ওই আর্জি খারিজ করে দেন। পরে এই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করে প্রতিষ্ঠানটি। সে আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৮ সালের ৪ জুলাই হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে প্রতি মাসে ১৭ লাখ টাকা করে বকেয়া ও সাড়ে সাত লাখ টাকা করে নিয়মিত মাসিক বিল পরিশোধ করতে বলা হয়। পাশাপাশি কোনো ধরনের বিলম্ব ছাড়া ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে যুগ্ম জেলা জজকে (অতিরিক্ত আদালত, নারায়ণগঞ্জ) এই মামলা নিষ্পত্তি করতে বলা হয়।

তবে হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ আপিল করলে তা শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আসে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি শুনানিকালে এই মামলাটি ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নিষ্পত্তি করার বিষয়টি আদালতের নজরে আসে।

এরপরই আপিল বিভাগ এই মামলার নথিসহ নারায়ণগঞ্জ আদালতের যুগ্ম জেলা জজ মো: সফিকুল ইসলামকে ১৩ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে উপস্থিত হতে আদেশ দেন।