৬৫ বছরের পুরনো মামলার রায় দিয়ে বিচারপতি বললেন, ‘তখন জন্মই হয়নি আমার’!
কলকাতা হাইকোর্ট

কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি নিয়োগের দাবিতে আইনজীবীদের কর্মবিরতি

বিচারপতি নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীরা এবার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে। শুন্যপদে বিচারপতি নিয়োগ, হাইকোর্টে স্থায়ী প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত করা এবং সুপ্রিম কোর্টে কলকাতা হাইকোর্টের প্রতিনিধি থাকা— এই তিন দাবিতে মূলত কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন আইনজীবীরা।

স্থানীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পর্যাপ্ত বিচারপতি নিয়োগের দাবিতে ১৬ মার্চ পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব নিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল মঙ্গলবার তারা একই সঙ্গে রাজ্যের সব আইনজীবী সংগঠনকে ১৬ই মার্চ পর্যন্ত সব আদালতে কর্মবিরতি পালন করতে অনুরোধ করেছে।

বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উত্তম মজুমদার জানান, হাইকোর্টে অবিলম্বে পর্যাপ্ত বিচারপতি নিয়োগের দাবিতে সংসদে সরব হওয়ার জন্য রাজ্যের সব সাংসদকে অনুরোধ করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে তাঁদের সংগঠন।

সভাপতির দাবি, ১৬ তারিখ পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব সমর্থন করেছে অন্য দুই আইনজীবী সংগঠন বার লাইব্রেরি ক্লাব এবং ইনকর্পোরেটেড ল সোসাইটি। ১৩ মার্চ পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব সোমবারেই নিয়েছে বার লাইব্রেরি ক্লাব।

কলকাতা হাইকোর্টে যেখানে ৭২ জন বিচারপতি থাকার কথা, সেখানে এখন মাত্র ২৯ জন বিচারপতি আছেন। তার মধ্যে আবার ২ জন বিচারপতি আন্দামান নিকোবর সংক্রান্ত মামলা দেখেন। ডিভিশন বেঞ্চ সংক্রান্ত মামলা দেখে হিসাব করলে প্রতিদিন গড়ে মাত্র ১৯ –২০ জন বিচারপতি মামলার শুনানি শোনেন বলেই আইনজীবীদের অভিযোগ। ফলে হাইকোর্টে জমছে মামলার পাহাড়। দিনের পর দিন বিচার পাচ্ছেন না বিচারপ্রার্থীরা। অন্যদিকে, রোজগারও প্রায় বন্ধ জুনিয়ার ও অল্প অভিজ্ঞ তরুণ আইনজীবীদের।

হাইকোর্টের আইনজীবীদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের নজরে একাধিকবার বিষয়টি আনা হলেও বিচারপতির সংখ্যা বাড়ানো হয়নি৷

আইনজীবীদের বক্তব্য, হাইকোর্টে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মামলা চলছে৷ সেই তুলনায় বিচারপতি হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন৷ তাই বহূবার বলেও কাজ না হওয়ায়, শেষ রাস্তা হিসাবেই কাজ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তাঁদের। কিন্তু, বিচার পাবার জন্য বিচারব্যবস্থায় লালবাতি ঝুলিয়ে দেওয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত বারবার প্রশ্ন উঠেছে সেটা নিয়েও।

তবে, আন্দোলনের সময় নিয়ে হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন, বার লাইব্রেরী ক্লাব ও ইনকর্পোরেটেড ল সোসাইটির মতান্তর থাকলেও তাঁরা একযোগে এই আন্দোলন অনির্দিষ্টকালের জন্য চালিয়ে নিয়ে যাবার পক্ষপাতী। কারণ, ওড়িশা ও কর্ণাটকেও আইনজীবীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটে চলে যাবার পরই হাইকোর্টগুলিতে বিচারপতি নিয়োগ করেছে কেন্দ্র সরকার। কেন্দ্র সরকার কলকাতা হাইকোর্টেও বিচারপতি নিয়োগ না করলে লাগাতার আন্দোলনের হূমকি দিয়েছেন আইনজীবীরা৷