খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশ আগামী ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।

আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদককে এবং পরবর্তী দুই সপ্তাহের মধ্যে আসামিপক্ষকে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেওয়ার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ আপিলের শুনানির জন্য ৮ মে দিন ধার্য করা হয়েছে। একইসঙ্গে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ সোমবার (১৯ মার্চ) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।

আপিলের বিষয়ে গতকাল শুনানি শেষ হওয়ার পর আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য ছিল।

সোমবার আদালত প্রথমে আদেশে বলেছিলেন, ২২ মে পর্যন্ত খালেদার জামিন স্থগিত। সে অনুযায়ী টেলিভিশনগুলো স্ক্রলও দেয়, খবর আসে অনলাইন গণমাধ্যমগুলোতে। কিছুক্ষণ পর আদালত আদেশ ‘মোডিফাই’ করে ৮ মে পর্যন্ত জামিন স্থগিত করেন।

আদালতে আজ খালেদার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার রফিকুল হক, দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম।

আদেশের পরে সাংবাদিকদের খালেদার জিয়ার তিন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, মওদুদ আহমদ ও জয়নুল আবেদীন বলেন, এ ধরনের আদেশ আগে কখনো দেখিনি।

জয়নুল আবেদীন বলেন, এটাকে নজিরবিহীন বলতে বাধ্য হচ্ছি। এটা অনিভপ্রেত। আমরা মর্মাহত।

গত ১২ মার্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের দেওয়া চার মাসের জামিন স্থগিত চেয়ে পর দিন ১৩ মার্চ আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক।

পরে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত এ দুই আবেদনের শুনানির জন্য ১৪ মার্চ দিন ধার্য করেন। এরপর ১৪ মার্চ আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদককে জামিনের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে) দায়ের করতে বলে চার মাসের জামিন ১৮ মার্চ (রোববার) পর্যন্ত স্থগিত করেন। এ আদেশ অনুসারে পরের দিন ১৫ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক লিভ টু আপিল দায়ের করেন।

এ আপিলের ওপর শুনানি হয় রোববার (১৮ মার্চ)। শুনানি শেষে আবেদনের ওপর আদেশের জন্য সোমবার দিন ধার্য করেন আদালত।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানসহ মামলার অপর পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।

৮ ফেব্রুয়ারি কারাদণ্ডের রায়ের পর থেকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারারসন খালেদা জিয়া।

নিম্ন আদালত থেকে ওই মামলার নথি হাইকোর্টে আসার পর তা দেখে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১২ মার্চ খালেদার চার মাসের অন্তবর্তী জামিন মঞ্জুর করেন। সঙ্গে সঙ্গে তার আপিল শুনানির জন্য ওই সময়ের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখাকে পেপারবুক প্রস্তুত করারও নির্দেশ দেন।

তবে ১৪ মার্চ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ খালেদা জিয়ার জামিন রোববার (১৮ মার্চ) পর্যন্ত স্থগিত করেন।

এরপর ১৫ মার্চ ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।