কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার

৭০ কারা কর্মকর্তা ও রক্ষীর বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ

সারাদেশে যেমন অভিযান চলছে, তেমনি কারাগারগুলোতেও মাদক সেবন ও পাচারে জড়িতদের শাস্তি দিতে তদন্ত চলছে। কর্মকর্তা আর কারারক্ষী মিলিয়ে অন্তত ৭০ জনের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে কারা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার (২৯ মে) তিনজনকে চাকরিচ্যুত এবং দুজনকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে।

কারাগারে বন্দিদের মাদক সরবরাহে বিভিন্ন কারা কর্মকর্তা ও কারারক্ষীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নানা সময়েই উঠেছে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মাদক নির্মূলে দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত ও গ্রেপ্তারের মধ্যে কারাগারের বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে তদন্ত ও শাস্তি দেওয়ার খবর জানা যায়।

কারা অধিদপ্তরের উপ মহাপরিদর্শক তৌহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, মাদক সংরক্ষণ, সেবন এবং বন্দিদের সরবরাহ করার অভিযোগে ব্যবস্থা গত এক বছর ধরেই নিচ্ছেন তারা।

গত বছরের মার্চ মাসে শরীয়তপুর কারাগারের সালাউদ্দিন, পলাশ হোসেন ও ফারুক হোসেন নামে তিন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে ইয়াবা সেবনের অভিযোগ আসে।

তৌহিদুল বলেন, “অভিযোগ আসার পরপরই তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর বিভাগীয় তদন্তে প্রমাণ পাওয়ায় আজ (মঙ্গলবার) তাদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়।”

এছাড়া মাদক সেবনের অভিযোগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কারারক্ষী রায়হান উদ্দিন ও আশরাফুল ইসলামকে অন্যত্র শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

তৌহিদুল বলেন, “বর্তমানে জেলার, ডেপুটি জেলার এবং কারারক্ষীসহ প্রায় ৭০ জনের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নিয়ে তদন্ত চলছে।”

এদের কেউ বন্দিদের কৌশলে মাদক সরবরাহ করেছেন, কেউবা আসক্ত, আবার কেউ নিজের কাছে সংরক্ষণ করে সময় ও সুযোগ মতো বিক্রি-সরবরাহ করে থাকেন।

এই ৭০ জনের সবাইকে সাময়িক বরখাস্ত করে রাখা হয়েছে জানিয়ে তৌহিদুল বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ মাদকের ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে থাকে। অপরাধ অনুযায়ী তাদের সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হবে।

উদ্ধার করা ইয়াবা বিক্রির অভিযোগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মোমিনুল ইসলামকে গত মার্চ মাসে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।

মাদক সংশ্লিষ্টতা ছাড়াও নানা অভিযোগে এক বছরে ৬৮টি করাগারের শতাধিক কর্মকর্তা এবং কারারক্ষীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান কারা উপমহা পরিদর্শক তৌহিদুল।

এর মধ্যে রয়েছে বন্দিদের হয়রানি, বন্দিদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে প্রতারণা, দায়িত্বে অবহেলা ইত্যাদি।

শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে পদাবনতি, পদোন্নতি না দেওয়া, অন্যত্র বদলি করা হয়।