খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা বাতিল করল হাইকোর্ট

খালেদা জিয়ার আপিল শুনানি ৮ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার দণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আসামিদের আপিল এবং সাজা বাড়াতে দুদকের আবেদনের শুনানি পিছিয়ে ৮ জুলাই দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।

আপিল শুনানি মুলতবি রাখতে খালেদা জিয়ার করা আবেদন নিষ্পত্তি করে আজ মঙ্গলবার (৩ জুলাই) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল মামলার নিষ্পত্তিতে উচ্চতর আদালতের আদেশ পুর্নবিবেচনা চেয়ে আবেদন করেছেন খালেদা জিয়া। তাই হাইকোর্টে আপিল শুনানি মুলতবি চেয়ে আবেদন করেছিলেন খালেদা। মুলতবি আবেদনের নিষ্পত্তি করে হাইকোর্ট ৮ জুলাই দিন ঠিক করে দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এবং খালেদা জিয়ার পক্ষে এ জে মোহাম্মদ আলী।

শুনানিতে এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, আপিল বিভাগ ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল মামলাটি নিষ্পত্তি করতে আদেশ দিয়েছেন। ওই আদেশ পুর্নবিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। এ রিভিউ নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্ট বিভাগে শুনানি মুলতবি রাখা হোক। আমাদের একটি রিজনাবল সময় দিন। আজকেই রিভিউ নিয়ে চেম্বার আদালতে যেতে পারি।

রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়, আপিল বিভাগ ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিষ্পত্তির কথা বলেছেন। তাই আপিল মামলাটির শুনানি শুরু হওয়া প্রয়োজন।

এরপর আদালত খালেদার আবেদন নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন।

গত ০১ জুলাই খালেদা ও অপর দুই আসামির আপিলসহ দুদকের আবেদনের শুনানির জন্য ৩ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন।

এ মামলায় ছয় আসামির মধ্যে খালেদা জিয়াসহ তিনজন কারাবন্দি। বাকি তিন আসামি পলাতক রয়েছেন।
খালেদা জিয়া ছাড়া বাকি দুইজন হলেন, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ।

পলাতক তিনজন হলেন-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান মামলাটিতে খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে খালেদার ছেলে ও বিএনপিরভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

রায় ঘোষণার ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রায়ের সার্টিফায়েড কপি বা অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি তারা এ আবেদন করেন। ২২ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ এবং অর্থদণ্ড স্থগিত করে নথি তলব করেন।

এরপর ৭ মার্চ অপর আসামি মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামালের আপিলও শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট।

১০ মে আরেক আসামি শরফুদ্দিনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন আদালত।

এই মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করে জামিন আবেদনের পর খালেদা জিয়াকে ১২ মার্চ চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের পর গত ১৬ মে তা বহাল রেখে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন।