দুই মাসের জন্য কক্সবাজারমুখী মোবাইল ব্যাংকিং বন্ধের অনুরোধ

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতি মাসে কক্সবাজারমুখী শত কোটি টাকার লেনদেনের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ। মাদক ব্যবসার কারণেই এতোবড় লেনদেন হচ্ছে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে দুই মাসের জন্য কক্সবাজারমুখী মোবাইল ব্যাংকিং বন্ধের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে মাদকবিরোধী বিজ্ঞাপন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রোববার (২২ জুলাই) বিকেলে তিনি এ অনুরোধ জানান। ‘চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’ শীর্ষক বিজ্ঞাপনটি নির্মাণ করে র‌্যাব।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, কক্সবাজারে মাত্র ২৩ লাখ লোকের বসবাস। সেখানে কোনো কল-কারখানা নেই। তাহলে প্রতিমাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে শতকোটি টাকার লেনদেন যায় কোথায়? সন্দেহ রয়েছে এটা অবৈধ লেনদেন এবং মাদক সংশ্লিষ্ট লেনদেন। তাই অন্তত দুই মাসের জন্য কক্সবাজারমুখী সব মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেন বন্ধ করার অনুরোধ করছি। আমরা বিষয়টি দেখতে চাই।

র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে ৮০ হাজার মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে। চলতি বছরের ৩ মে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু হয়। গত ৮০ দিনে ১০২ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য জব্দসহ প্রায় ১০ হাজার লোককে মাদক সংশ্লিষ্টতায় গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

র‌্যাব ডিজি আরো বলেন, এ সময়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৫ হাজার ৮৭৭ জনকে সাজা দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে ১ হাজার ৭১৩টি নিয়মিত মামলায় ২ হাজার ৯৫৯ জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ১ হাজার ৩৮ জনকে ৪০ লাখ ৭২ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

গত ৮০ দিনে ১ হাজার ৭৯১টি অপারেশন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর মধ্যে ৩৭টি অপারেশন ছিলো ঝুঁকিপূর্ণ। এ অপারেশনে ৪৭ জন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ও কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।

মাদকবিরোধী র‌্যাব ও পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানের পরেও মাদক প্রবেশ করছে। গত ১ সপ্তাহে ১১টি দূরপাল্লার বাস জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি বিলাসবহুল গাড়ি। এক্ষেত্রে বাস মালিকদেরও দায়িত্ব রয়েছে। এ বিষয়ে শিগগিরই বাস মালিকদের সঙ্গে আলোচনা হবে বলেও জানান বেনজীর আহমেদ।

সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলেও বর্তমানে ৭০-৮০ লাখ মাদকসেবী রয়েছেন। এর মধ্যে যদি ৬০ লাখ ইয়াবাসেবী ও ১০ লাখ অন্যান্য মাদকসেবী হয়, তাহলে প্রতি বছর অন্তত মাদকে ১ কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। এটা মৌচাকে ঢিল নয়, ভিমরুলের চাকে ঢিল। তাই মাদকের বিরুদ্ধে সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।