উচ্চ আদালত

গুগল-ফেসবুকের রাজস্ব ফাঁকির প্রতিবেদন না পাওয়ায় হাইকোর্টের অসন্তোষ

সার্চ ইঞ্জিন গুগল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ ইন্টারনেটভিত্তিক সবধরনের প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব ফাঁকির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না করায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

পরে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৭ মার্চ পরবর্তী দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে ২০১৮ সালের ১৮ এপ্রিল গুগল ও ফেসবুকসহ ইন্টারনেটভিত্তিক সবধরনের প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব ফাঁকির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এছাড়াও ইন্টারনেট মাধ্যমগুলোর মাধ্যমে বিজ্ঞাপন, ডোমেইন বিক্রি এবং বিভিন্ন প্রকার লাইসেন্স বিক্রির ফিসহ যেকোনো লেনদেনের বিপরীতে যে পরিমাণ টাকা পরিশোধ করা হয় তার থেকে আদায়যোগ্য রাজস্ব সংগ্রহ করতে বলা হয়।

একইসঙ্গে ইন্টারনেটভিত্তিক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় রাজস্ব আদায়ের নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

তবে সে নির্দেশনাটি বাস্তবায়িত হয়েছে কি না- সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়। কিন্তু সে প্রতিবেদন দাখিল না করায় হাইকোর্ট এনবিআর, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিটিআরসির ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করলেন।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল সার্চ ইঞ্জিন গুগল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ ইন্টারনেটভিত্তিক সবধরনের প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব ফাঁকির বিরুদ্ধে রিট দায়ের করা হয়।

রিট আবেদনে, ইন্টারনেটভিত্তিক সকল প্রতিষ্ঠানকে করের আওতায় আনা, প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে পরিচালনার জন্য নীতিমালা প্রস্তুত করা, প্রতিষ্ঠানগুলো কী পরিমাণ টাকা নিচ্ছে তার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি এবং সেই কমিটি দিয়ে বিগত ১০ বছরে কী পরিমাণ অর্থ নেয়া হয়েছে তা নিরূপণের নির্দেশনা চাওয়া হয়।

হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের ছয় আইনজীবীর পক্ষ থেকে এই রিট দায়ের করা হয়। আইনজীবীরা হলেন- ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউসার, অ্যাডভোকেট আবু জাফর মো. সালেহ, অ্যাডভোকেট অপূর্ব কুমার বিশ্বাস, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাজ্জাদুল ইসলাম ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মাজেদুল কাদের।

রিটে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব, দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক এবং বাংলাদেশ নিউজ পেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মতিউর রহমানসহ, গুগল, ফেসবুক, ইয়াহু এবং ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে বিবাদী করা হয়।