বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা (ফাইল ছবি)
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা (ফাইল ছবি)

অসুস্থ খালেদাকে আদালতে আনা হয়নি, পিছিয়েছে গ্যাটকো মামলার শুনানি

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফাইল ছবিবিএনপির কারাবন্দী চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার শুনানিতে আদালতে হাজির করা হয়নি। কারা কর্তৃপক্ষ আদালতকে জানিয়েছে, খালেদা জিয়া অসুস্থ।

খালেদা জিয়াকে আদালতে না আনায় তাঁর আইনজীবী শুনানির জন্য সময় চেয়ে আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১৭ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের শুনানির নতুন দিন ঠিক করেন।

আজ সোমবার (১৮ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন এ আদেশ দেন।

এ দিন বেলা ১১টা ৩৮ মিনিটে বিচারক এজলাসে আসেন। শুনানির শুরুতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতকে বলেন, ‘আজ অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। দুদকের পক্ষ থেকে আমরা শুনানি করেছি। এখন আসামিপক্ষ শুনানি করবে।’

এসময় খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির না করায় অন্য আসামিদের শুনানি করা যেতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন দুদক আইনজীবী।

অন্যদিকে, খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালতকে বলেন, ‘খালেদা জিয়া অসুস্থ। যে কারণে কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে আদালতে হাজির করেনি। আইন অনুযায়ী, মামলার সব আসামির উপস্থিতিতে শুনানি হওয়ার কথা। আমরা মামলার কাগজপত্র চেয়ে আবেদন করেছিলাম। সেই কাগজপত্র এখনো পাইনি।’

আদালতকে তখন মোশাররফ হোসেন কাজল জানান, মামলার কাগজপত্র দুদকের সংশ্লিষ্ট সাধারণ নিবন্ধন কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।

আদালত ওই কাগজপত্র আদালতে জমা দিতে বললে মোশাররফ হোসেন কাজল জানান, আজই তিনি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবেন।

আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালতকে জানান, খালেদা জিয়া অসুস্থ। এর আগে যেদিন তাঁকে আদালতে নিয়ে আসা হয়, সেদিন তিনি পড়ে গিয়েছিলেন।

আদালত দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে শুনানির নতুন দিন ঠিক করে এজলাস ত্যাগ করেন। পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতে এ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

দুর্নীতির পৃথক দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারে রাখা হয়েছে। গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি সেখানে অবস্থান করছেন।

২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াসহ ১৩ জনকে আসামি করে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা করে দুদক। ২০০৮ সালের ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ২৪ আসামির মধ্যে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো, সাবেক মন্ত্রী বিএনপির সাবেক মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া, সাবেক মন্ত্রী এম কে আনোয়ার, এম সাইফুর রহমান, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামী (মানবতাবিরোধী মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর), চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান অর্থ এবং হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেম মারা গেছেন।

অভিযোগপত্র দেওয়ার পর গ্যাটকো মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে পৃথক দুটি রিট আবেদন করেন খালেদা জিয়া। ২০০৮ সালের ১৫ জুলাই হাইকোর্ট এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন ও রুল দেন। ওই সময় থেকে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত ছিল। আর ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট জারি করা রুল খারিজ করে রায় দেন বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি আবদুর রবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।