প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়

পাক-ভারত যুদ্ধের প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে নিরাপদ রাখতে আইনি নোটিশ

ভারত-পাকিস্তানের সম্ভাব্য ও ভবিষ্যত যুদ্ধের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাংলাদেশের ভূখন্ডের নিরাপত্তার জন্য আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বা অ্যন্টি-ব্যালিস্কিক মিসাইল ক্রয় বা উৎপাদনের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে আইনী (লিগ্যাল) নোটিশ দিয়েছেন এক আইনজীবী।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে বিবাদী করে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী মোঃ মাহমুদুল হাসান এ নোটিশ পাঠিয়েছেন।

নোটিশে বলা হয়, ভারতীয় পার্লামেন্টে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করার মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে রূপান্তর করা হয়েছে। এ নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক অত্যন্ত সংঘাতময় অবস্থায় রূপ নিয়েছে। এই কাশ্মীরের কিছু অংশ ভারতের দখলে এবং কিছু অংশ পাকিস্তানের দখলে আছে, পাশাপাশি কিছু অংশ চীনের দখলে আছে। সর্বোপরি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ভারতের সাথে সম্ভাব্য যুদ্ধের পাশাপাশি পরমাণু যুদ্ধের হুংকার দিয়ে আসছেন।

এছাড়া, যেহেতু কাশ্মীর নিয়ে কোন পক্ষের বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়ার মানসিকতা নেই। সুতরাং এ নিয়ে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে লিপ্ত হলে নিকটবর্তী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ভয়াবহ নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে। ভারতের পুরো ভূখন্ড পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র বা মিসাইলের আওতায় রয়েছে।

উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের শাহীন-২ ক্ষেপণাস্ত্র ২৫০০ কিলোমিটার দূরে আঘাত আনতে সক্ষম, অপরদিকে শাহীন-৩ ক্ষেপণাস্ত্র ২৭৫০ কিলোমিটার দূরে আঘাত আনতে সক্ষম । সুতরাং ভারত-পাকিস্তানের সম্ভাব্য ও ভবিষ্যতের যুদ্ধে পাকিস্তান যদি ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহে যেমন ত্রিপুরা, মেঘালয়, আসাম, মনিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, অরুনাচল প্রদেশে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, সেক্ষেত্রে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো অবৈধভাবে বাংলাদেশের আকাশপথ ব্যবহার করবে যা বাংলাদেশের জন্য চরম নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। অপরদিকে উক্ত ক্ষেপণাস্ত্রগুলো কারিগরি কোন জটিলতায় বাংলাদেশের ভূখণ্ডে পতিত হলে বাংলাদেশে ব্যাপক প্রাণহানির আশংকা রয়েছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বা অ্যন্টিব্যালিস্কিক মিসাইল ক্রয় বা উৎপাদন করতে হবে।

আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বা অ্যন্টিব্যালিস্কিক মিসাইল হলো এমন এক ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যার মাধ্যমে শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র বা যুদ্ধ বিমানকে আকাশেই ধ্বংস করে দেওয়া হয়। বর্তমানে বিশ্বে রাশিয়ার তৈরি S-400 ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরী প্যাট্রিয়ট অ্যন্টিব্যালিস্কিক মিসাইল বা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত জনপ্রিয়।

সর্বোপরি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ও বাংলাদেশের আকাশ নিরাপদ রাখতে উক্ত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বা অ্যন্টিব্যালিস্কিক মিসাইল ক্রয় বা উৎপাদন করা আবশ্যক এবং এ সংক্রান্ত ব্যাপারে ৩০ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আইনজীবী মোঃ মাহমুদুল হাসান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন। অন্যথায় এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করেন তিনি।